রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) আইনে ‘ছাত্র সংসদ’ সংযুক্ত করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে শুরু হওয়া অনশন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গণঅভ্যুত্থানের পর বেরোবিতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেট সভা করে ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ঘোষণা দেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্র সংসদ যুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, লিফলেট বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এরপরও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি ইউজিসি কর্তৃপক্ষ অনুমোদন না দেওয়ায় আমরণ অনশনে বসে শিক্ষার্থীরা। ছাত্র সংসদ না থাকায় শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা ও দাবি প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে শিক্ষার্থীরা নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮-২০০৯ সেশন থেকে শুরু করে অদ্যবধি প্রায় ২০ হাজার নিবন্ধিত শিক্ষার্থীর দেয়া
ছাত্র সংসদ ফান্ডে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা জমা পড়েছে। কিন্তু ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই প্রশাসনের।
অনশনে বসা শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান জানান, কোটা আন্দোলনের সময়শিক্ষার্থীদের ৯ দফার অন্যতম ছিল প্রত্যেক ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা। জুলাই বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে গেলেও, আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দৃশ্যমান কিছু দেখতে পাইনি। ছাত্র সংসদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়। ৩৬ দিনে আমরা স্বৈরাচারের পতন হলেন ছাত্র সংসদের মতো যৌক্তিক বিষয়ের জন্যও আমাদের দীর্ঘসূত্রিতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত হতাশার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অনশন চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র সংসদের বিষয়টির খসড়া ইউজিসিতে পাঠিয়েছি। ইউজিসি সেই খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে গেলেই তা চূড়ান্ত হবে। এর পরই আমরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারবো।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারণে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে। এ কর্মসূচিকে আমি নেতিবাচক হিসেবে দেখছি না। আমার মনে হয় শিক্ষার্থীদের পুনরায় চিন্তা করবে বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য। ইউজিসি থেকে জানিয়েছে যে ছাত্রদের একটু বোঝাতে হবে তাড়াহুড়ো করে কোন আইন করা যায় না। এতে ভুলের শঙ্কা থেকে যায়। বেরোবি আইনে ছাত্র সংসদ যুক্ত করার বিষয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত