খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, আমরা খাদ্যশস্যের সংকট কাটিয়ে উঠেছি। এবার বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এরই মধ্যে বেশি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ মেট্রিক টন। সেখানে এরই মধ্যে ৫ লাখ মেট্রিক টনের চুক্তি হয়ে গেছে। তাছাড়া এরই মধ্যে পৌনে চার লাখ মেট্রিন টন চাল আমাদের ঘরে চলে এসেছে। কাজেই এবার আশা করছি ৬ লাখ মেট্রিক টন সংগ্রহ করতে পারবো। যে হারে বোরো সংগ্রহ হচ্ছে তাতে আমরা আরও একমাস সংগ্রহের জন্য বাড়িয়ে দিতে পারি।
জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে মঙ্গলবারের প্রশ্নাত্তর পর্বে সরকার দলীয় সদস্য আব্দুল মান্নান ও জাসদ দলীয় সদস্য নাজমুল হক প্রধানের পৃথক দুই সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এবার বোরো মৌসুমের শুরুতে হাওরে পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে এবার খাদ্য গুদামে মজুদ তলানিতে নেমে এসেছিলো। তবে এ মুহূর্তে আমরা সংকট কাটিয়ে উঠেছি। আগে আমাদের মজুদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ লাখ মেট্রিক টন। এখন যেহেতু লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তাই লক্ষ্যমাত্রা কমপক্ষে ১৫ লাখ মেট্রিক টন হওয়া উচিত। আশাকরি শিগগিরই আমরা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবো।
চালের দাম কমে আসতে শুরু করেছে : শেখ মো: নুরুল হক (খুলনা-৬) এর লিখিত প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে দেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। চলতি অর্থ বছরে ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, ভারত ও থাইল্যান্ড হতে ১৫ লাখ টন চাল আমদানীর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এছাড়া চাল আমদানী শুল্ক কমিয়ে দেওয়ায় বেসরকারিভাবে বিপুল পরিমাণ দেশে আসায় খোলা বাজারে চালের দাম কমে আসতে শুরু করেছে।
চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত মনিটরিং : সরকার দলীয় সদস্য মো. আবদুল্লাহ (লক্ষ্মীপুর-৪) এর লিখিত প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, সরকার চালের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত বাজার দর মনিটরিং করে থাকে। দেশে বর্তমানে খাদ্যশস্যের দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমার সাথে সাথে বাংলাদেশেও খাদ্যশস্যের দাম কমেছে। বর্তমানে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা কমেছে এবং আটার দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।
খাদ্যের চাহিদা ছিল ২৯৬ লাখ মেট্রিক টন : সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষের (মুন্সিগঞ্জ-১) এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলমেন্ট স্ট্যাডিস (বিআইইডএস)-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে সারা দেশে খাদ্যের চাহিদা ছিল ২৯৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাল ২৬৯ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ২৭ লাখ মেট্রিক টন। সারাদেশে সরকারিভাবে খাদ্য গুদামের মোট ধারণক্ষমতা ২১.১৮ লাখ মেট্রিক টন। খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন খাদ্য নির্মাণ’ ও ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষাণাগার নির্মাণ’ শীর্ষক দুটি প্রকল্প চলমান আছে। এ দুটি প্রকল্প সমাপ্ত হলে খাদ্যশস্য সংরক্ষণ ক্ষমতা আরও ৬.৪০ লাখ মে.টন বৃদ্ধি পাবে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ জানুয়ারি ২০১৮/এনায়েত করিম