দেশের সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে না পারায় বিআরটিএর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। হাজির হওয়া সংস্থাটির পরিচালককে উদ্দেশ্য আদালত বলেছেন, অফিসে বসে বসে শুধু চা খেলে হবে না, দেশপ্রেম থাকতে হবে। বিআরটিএ কি করে? আমরা কেন ডাকবো, তাদের (বিআরটিএ) ডাকতে হবে কেন? বিদেশিরা পারছে, আমরা পারছি না কেন?
আদালতের তলবে সোমবার বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানী হাজির হওয়ার পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি এবং লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সারাদেশে থাকা লাইসেন্সধারী ফিটনেসহীন ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ি এবং লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে বিআরটিএ কি ব্যবস্থা নিয়েছে তাও এক মাসের মধ্যে জানাতে হবে।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান ও বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালককে এ আদেশ পালন করতে হবে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক। বিআরটিএ'র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী ও রাফিউল ইসলাম।
গত ২৩ মার্চ একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব আদালতের নজরে আনেন। এরপর আদালত রুলসহ আদেশ দেন।'
রুলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, পাশাপাশি সংবিধানের ৩২ ধারার আলোকে জীবন বাঁচার অধিকার বাস্তবায়নে কেন মোটর ভেহিক্যাল আইন ১৯৮৩ এর বিধান সমূহ সঠিকভাবে পালনের জন্য কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
একইসঙ্গে বিআরটিএ চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকার ট্রাফিক পুলিশের উত্তর ও দক্ষিণের ডিসি এবং বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানীক এ তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওইদিন বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালককে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই আদেশ অনুযায়ী সোমবার বিআরটিএ এর পক্ষ থেকে একটি ও পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা। একইসঙ্গে বিআরটিএ এর পরিচালক হাজির হন।
আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক জানান, ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি এবং লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে সারাদেশে থাকা লাইসেন্সধারী ফিটনেসহীন ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ি এবং লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে বিআরটিএ কি ব্যবস্থা নিয়েছে তাও এক মাসের মধ্যে জানাতে হবে।
আদালতে বিআরটিএ'র আইনজীবী জানান, সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ির সংখ্যা ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ এবং ঢাকা শহরে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩০৮টি। তবে বিআরটিএ'র লাইসেন্স ছাড়া গাড়ির সংখ্যা জানার সুযোগ নেই। এটি রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটি বলতে পারবে।
বিডি-প্রতিদিন/২৪ জুন, ২০১৯/মাহবুব