সরকারের ‘একলা চলো’ নীতির কারণেই জনগণ করোনাভাইরাসের ‘প্রচন্ড ঝুঁকি’র মধ্যে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে যে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিলো, সেই উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তারা করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করতে গিয়ে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ‘একলা চলো নীতি’ তাদের সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থার নীতি। সেই নীতির কারণেই আজ জনগণ প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দুপুরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে গুম-খুন হওয়া এবং নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া ঈদ উপহার প্রদানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। এ সময় ছাত্রদলের নিহত তিন পরিবার যথাক্রমে নুর আলম, নুরজ্জামান ও মাহবুবুর রহমান বাপ্পীর পরিবারের হাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সারাদেশে গুম-খুন-নির্যাতনে নিহত সহ¯্রাধিক নেতা-কর্মীর পরিবারের কাছে এই উপহার সামগ্রী পৌঁছিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
দলের নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ইশরাক হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আতিকুর রহমান রুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসীন আলী, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, নাজমুল হাসান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা প্রথম থেকে লক্ষ্য করেছি যে, করোনা ইস্যুতে সরকারের মধ্যে প্রচন্ড রকমের উদাসীনতা ছিলো, অবহেলা ছিলো। তারা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলো। আমরা জানি, তারা কি কাজে ব্যস্ত ছিলো। তারা এটাকে প্রথম দিকে গুরুত্ব দেয়নি। যখন ঘাড়ের মধ্যে এসে পড়ে গেছে, তখন এটাকে সামাল দেওয়ার মতো শক্তিও তাদের ছিলো না।
তিনি বলেন, আজকে করোনাভাইরাসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তাদের যে শাসনব্যবস্থা সেটা কতটা ভঙ্গুর। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে গেছে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আছে বলেই মনে করা যায় না। সাধারণ রোগীরা যাদের ক্যান্সার হয়েছে, যাদের হয়ত লাঞ্চ ক্যান্সার বা টিবি আছে বা যাদের এপেন্ডিসাইটিস রয়েছে তারা কোনো চিকিৎসা পায় না। এটাই আজ চরম বাস্তবতা।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনসচেতনা সৃষ্টিসহ বিএনপির বিভিন্ন কাযক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিলি করেছি। মাস্ক বিতরণ করেছি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ড্যাব চিকিৎসক-স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য পিপিই দিয়েছি, হটলাইন চালু করেছে রোগীর পরামর্শ দেয়ার জন্য। আমরা ৮৭ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম এটা বিবেচনা করা হোক।
সরকারের প্রতি আহবান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন রাজনৈতিক বির্তকের সময় নয়, এটা এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সময় নয়। অহংকার এবং আত্মম্ভরিতা বাদ দিয়ে আসুন, সমগ্র জাতিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করি। ঐক্যবদ্ধ করে সমগ্র জাতিকে করোনাভাইসের আগ্রাসন মোকাবিলা করার জন্য আমরা চেষ্টা করি। সেই উদ্যোগ আপনারা গ্রহণ করুন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন