সরকারি গুদামের মজুদ বাড়াতে ধান-চাল ক্রয়ে গতি ত্বরান্বিত করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। একইসাথে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অবৈধ কার্ড বাতিলে শক্ত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। প্রয়োজনে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড ডিজিটালাইজড করা হবে বলেও জানান তিনি।
আজ বুধবার দুপুরে মন্ত্রী তার মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
সভার সমন্বয় করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। ধান চাল ক্রয়ে সরকারি সংগ্রহের গতি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, খাদ্যশস্যের মান যাচাই করে সংগ্রহ করতে হবে।
ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়ে কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দেয়া হয়েছিল অতি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত গরীব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে তালিকা প্রেরণ করার। এজন্য যেকোনো প্রকার হুমকি-ধামকিকে ভয় না করে, স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে থেকে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় অতীতে তালিকা তৈরি করার সময়ে যে ট্যাগ অফিসার ছিলেন তাদেরকে সরিয়ে নতুন করে কাউকে ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব দিয়ে হালনাগাদ করে নতুন তালিকা প্রণয়ন করার নির্দেশ দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এ দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে প্রয়োজনে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড ডিজিটালাইজড করা হবে।
ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনা পরিস্থিতি, চলতি বোরো ধান কাটা-মাড়াই, সরকারিভাবে ধান চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মার্চ, এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এই পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল প্রদান করা হয়। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মে মাসেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের প্রকিউরমেন্ট যেন কৃষকবান্ধব প্রকিউরমেন্ট হয়। লটারি করার পর নির্বাচিত কৃষকের তালিকা যেন ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের তথ্যকেন্দ্রে এবং উপজেলা খাদ্য অফিসে দৃশ্যমানভাবে টানানো হয়। নির্বাচিত কৃষক ধান দিতে না পারলে সঙ্গে সঙ্গে তালিকায় অপেক্ষমাণ কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, চালের মান নিয়ে কোনো আপোষ নেই। পাশাপাশি কোনো কৃষক যেন তার স্লিপ মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের নিকট বিক্রি না করেন সেদিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে।
সভায় উপস্থিত জেলা প্রশাসকগণ এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ আশ্বস্ত করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টার্গেটকৃত ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
ভিডিও কনফারেন্সে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক সংগ্রহ, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসকগণ, চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ বক্তব্য রাখেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম