বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকারের ব্যর্থতার কারণে মাহে রমজানেও দেশের মানুষ শান্তি-স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারছে না। প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, তারা ব্যর্থ হয়েছে অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে হত্যা করে আজকে রমজানে দেশে একটা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছে তারা।’
রবিবার প্রথম রোজায় রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে এতিম ও উলামা-মাশায়েখদের সম্মানে ইফতার অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর ভয়াবহ ট্রাফিক ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দেখেন- আজকে এখানে (ইফতার অনুষ্ঠান) অনেক মেহমান আসতে পারেননি। আলেম-উলামা, মাদ্রাসার ছেলে-মেয়েরা পর্যন্ত আসতে পারেননি। কারণটা কী? ট্রাফিক জ্যাম। এতো ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম যে, কেউ এসে পৌঁছাতে পারেননি।’
এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। ইফতারের ঠিক ১৫ মিনিট আগে মাত্র অর্ধেক অতিথি অনুষ্ঠানে এসে পৌঁছাতে পারেন। বিএনপি মহাসচিব প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যামে আটকে থেকে পরে পথ থেকে মোটরসাইকেলে অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও ঠিক ইফতার শুরুর মুহূর্তে অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান। তিনি জানান, প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যামে নিজের গাড়ি রাস্তায় রেখে হেঁটে আসতে হয়েছে। তেজগাঁও মহিলা এতিমখানা, শান্তিনগর এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং ফার্মগেট মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীদেরও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ইফতার শুরুর প্রায় ৫ মিনিট পর অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান।
উলামা-মাশায়েখদের মধ্যে বাড্ডা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোশাররফ হোসেন, স্পিচ অব ইসলামের প্রেসিডেন্ট মাওলানা রেজাওয়ানুর রহমান খাঁন, মোহাম্মদপুর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মহিউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদপুর বায়তুল ফজল সিনিয়র মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা গোলাম মাওলা মূল মঞ্চে ছিলেন।
ইফতারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুল কাইয়ুম, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক ও সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
ইফতার শুরুর আগে বিভিন্ন টেবিল ঘুরে আগতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব। করোনার কারণে দুই বছর কোনো ইফতার অনুষ্ঠান করতে পারেননি তারা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রথম রোজার ইফতার সবসময়ই এতিমদের সঙ্গে করতেন।
ইফতারের প্রাক্কালে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা ১৬ কোটি মানুষের প্রিয় মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ইফতার করেছি। দুর্ভাগ্য আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিনি আজকে অসুস্থ হয়ে গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব আমাদের কাছে থেকে ৮ হাজার মাইল দূরে নির্বাসিত অবস্থায় রয়েছেন। আমরা এই মাহে রমজানে আশা করেছিলাম সকল জিনিসপত্রের দাম কমবে। না কমলে অন্তত বাড়বে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা যে, প্রত্যেকটি জিনিসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। যেটা নিয়ে আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, আমরা দলের পক্ষ থেকে জনগণের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করেছি, বিক্ষোভ করেছি।’
বিডি প্রতিবেদন/জুনাইদ আহমেদ