তাসখন্দে চলমান স্পিকার্স অব পার্লামেন্ট সামিটে অংশ নিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি ও জনজীবনে কোভিড-১৯ মহামারি নজিরবিহীন দুর্দশা বয়ে এনেছে। সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে বৈশ্বিক ও সামাজিকভাবে প্রাধান্য দিতে হবে। কিছু দেশে তেলের উচ্চ মূল্য অন্যান্য অনেক দেশের শক্তি উৎপাদন খাত তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। রপ্তানি উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা ও নারী উদ্যোক্তাদের স্বার্থে প্রণোদনা জরুরি।
বৃহস্পতিবার উজবেকিস্তানের তাসখন্দে ‘স্পিকার্স অব পার্লামেন্টের ১৪তম সামিট’ এর এড্রেসিং দ্য রিস্কস অব দ্য পোস্ট প্যান্ডেমিক গ্লোবাল রিকভারি’ শীর্ষক সেশনে স্পিকার এসব কথা বলেন। সংসদের গণসংযোগ বিভাগ এ তথ্য জানায়। সেশনে সভাপতিত্ব করেন ‘সিনেট অব উজবেকিস্তানে’র চেয়ারউইমেন তানজিলা নারবিভা। সূচনা বক্তব্য রাখেন আইপিইউ’র প্রেসিডেন্ট মি. দুয়ার্তে পাসিকো। সেশনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের স্পিকারগণ তাদের অভিমত তুলে ধরেন।
এর আগে, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার ভোরে তাসখন্দ বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান সিনেট অব উজবেকিস্তানের চেয়ারউইমেন তানজিলা নারবিভা ও উজবেকিস্তানের সংসদ সদস্যরা। স্পিকারের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন সাগুফতা ইয়াসমিন এমপি, পারভীন হক সিকদার এমপি, আদিবা আনজুম মিতা এমপি, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, যুগ্মসচিব সুমিয়া খানম ও সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস মিয়া মোহাম্মদ নাঈম রহমান।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে কিছু সুনির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্প কারখানাগুলো পুনরুদ্যমে চালু ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পুনরায় উন্নয়ন, ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট, রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, বিভিন্ন খাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাস ইত্যাদি বৈশ্বিকভাবে জরুরি। কেননা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে।
স্পিকার বলেন, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অতিদরিদ্রদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ২০ মিলিয়ন পরিবারকে 'ফ্যামিলি কার্ড' দেয়া হয়েছে যাতে করে তারা স্বল্প মূল্যে খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও আর্থ-সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনজীবনের অভিজ্ঞতাগুলো এবং সামাজিক বৈষম্যকে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। এজন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা সহায়তা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নগদ স্থানান্তর প্রক্রিয়া প্রসারিত করা উচিত যাতে করে অতিদরিদ্ররা সামাজিক নিরাপত্তার বাইরে ছিটকে না পরে।
তিনি বলেন, উন্নত, প্রাণবন্ত, শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, খাদ্যনিরাপত্তার মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের সাথে সংযুক্ত বিধায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ জরুরি।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক