পটুয়াখালীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মো. জাকারিয়া (২২) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যুর পর তার মরদেহ বহনের জন্য হাসপাতালের ট্রলি না পেয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন তার স্বজনরা। পরে চাদরে জড়িয়ে মরদেহ বহন করেন তারা।
গতকাল রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
তবে ট্রলি না পওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা।
তিনি বলেন, জাকারিয়া (২০) নামের এক রোগী Acute leptospirosis রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ওই ওয়ার্ডে তখন দুজন নার্স ছিলেন, তারা এখন আমার সামনে বসা আছে। ট্রলি চালানোর দায়িত্বরত লোক সেখানে ছিলো না। জরুরি বিভাগ থেকে ট্রলির লোক আসার আগেই রোগী নিয়ে স্বজনরা বেরিয়ে যান।
মৃত জাকারিয়া পটুয়াখালী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি দুমকি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের আঠারো গাছিয়া গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। বাবা মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মা হোসনেয়ারা বেগমের একমাত্র ছেলে ছিলেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র হিযবুল্লাহ পটুয়াখালী জেলা শাখার সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মা হোসনেয়ারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘টাকার বিনিময় হলেও আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দেন। মারা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে আমার ছেলেটা বারান্দার বেড থেকে বলছিল, ‘আমারে নিচে নামাইয়া দাও।’ কিছুক্ষণের মধ্যেই সে আমাদের ছেড়ে চলে গেল।’
বাবা জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর কোনো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি। ভালো ডাক্তার পর্যন্ত পাইনি। নার্সদের কাছে বারবার অনুরোধ করলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। আমার ছেলে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। মৃত্যুর পর শেষবারের মতো লাশ বহনের ট্রলি চেয়েছিলাম, সেটিও হাসপাতাল দেয়নি।’
এ বিষয়ে দায়িত্বরত নার্সদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে রাজি হননি।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ