কুমিল্লার চকবাজার-চৌয়ারা সড়কের নগরীর গুধির পুকুরপাড় এলাকায় সড়কের পাশে কয়েকটি গাড়ি মেরামতের ওয়ার্কশপ রয়েছে। সারাদিন সেখানে লোহা কাটা আর হাতুড়ি পেটার শব্দে কর্মচাঞ্চল্য বিরাজ করে। এই কাঠখোট্টা পরিবেশের মাঝেই একটি পরিত্যক্ত গাড়ি হয়ে উঠেছে ফুলের মাচা।
গাড়ির এই বাগান দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা। সচেতন মহলের মতে, শহুরে জীবনে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এমন উদ্যোগ অনুকরণীয় হতে পারে। ফরহাদ অটো ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের পরিচালক আরিফ হোসেন ফরহাদ এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তার বাড়ি পাশের সুজানগর এলাকার জগন্নাথ মন্দির রোডে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় দুই বছর আগে একটি গাড়ি মেরামতের জন্য ওয়ার্কশপের সামনে রাখা হয়। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে চাকা মাটিতে দেবে গেছে, সিট ও অন্যান্য সরঞ্জাম নেই বললেই চলে। অনেকটা গাড়ির কঙ্কাল। তবে গাড়ির ছাদে মাটিভর্তি ঢালা বসানো হয়েছে। সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কুঞ্জলতা ফুলের গাছ। ছোট ছোট ফুলও ফুঁটে উঠেছে। উৎসুক তরুণ-তরুণীরা এখানে এসে ছবি ও সেলফি তুলছেন। ফরহাদ কাজের ফাঁকে গাছের পরিচর্যা করেন। এ গাছের বীজ থেকে চারা হয়, যা স্থানীয়রা নিয়ে যান।
আরিফ হোসেন ফরহাদ বলেন, গাছ ও পশু-পাখির প্রতি আমার আলাদা টান আছে। বাড়িতেও অনেক গাছ লাগিয়েছি, কিছু পশু-পাখিও আছে। এখানে গাড়িটি খালি পড়ে ছিল, তাই পাশে একটি ফুলের চারা লাগাই। সেটি এখন গাড়ির ছাদে ছড়িয়ে পড়েছে। গাছটার প্রতি মায়া লেগে গেছে। অন্যরা এসে গাছ দেখে ভালো বলে, বীজ নেয়, ছবি তোলে। এগুলো দেখে আমারও ভালো লাগে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. হেলাল ও তানভীর হোসেন মাহিন বলেন, ফরহাদের গাছের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। বিভিন্ন সময় গাছ কিনে বাড়িতে লাগান। এখন পরিত্যক্ত গাড়িতে ফুলের বাগান করেছেন, এটি আমাদের ভালো লাগে। তাকেও আমরা উৎসাহিত করি।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, নগর জীবনে কৃষিজমি কমছে। অনেকে ছাদে বা বারান্দায় ফুল, ফল ও সবজির চাষ করেন। ফরহাদের পরিত্যক্ত গাড়িতে ফুলের বাগান ক্ষুদ্র উদ্যোগ হলেও এটি অনুপ্রেরণার হতে পারে। তার মতো ছোট জায়গায়ও আমরা চাষ করে নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে পারি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ