৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ১২:২২

বিএসএমএমইউ’র কাছে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের মরণোত্তর দেহ হস্তান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএসএমএমইউ’র কাছে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের মরণোত্তর দেহ হস্তান্তর

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এনাটমি বিভাগের কাছে দেশ বরেণ্য স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের (৭৯) মরণোত্তর দেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। 

বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এ মরণোত্তর দেহ গ্রহণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। 

অনুষ্ঠানে বিদেহীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। মরণোত্তর দেহদানে দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে প্রয়াতের একমাত্র ছেলে সাইদ হোসেন তমাল মরদেহে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সকলকে এক মিনিট করতালি প্রদান করার অনুরোধ জানান। উপস্থিত সকলে এক মিনিট করতালি দিয়ে প্রয়াত স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনকে শ্রদ্ধা জানান। 

একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের মরদেহটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগে সংরক্ষণ, শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের অনুমতিপত্রটি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের নিকট প্রদান করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এই ধরনের মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা এবং মরণোত্তর দেহ দানকারী নিকট আত্মীয়সহ পরিবারের সকলকে এই ত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দেশের সকল মানুষের প্রতি এইরকম মহতী কাজে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের দেহ সংরক্ষণ, পরীক্ষণ এবং গবেষণাকার সর্বাধুনিক। আমাদের এখানে যাদের দেহদান করা হয়েছে, তাদের স্বজনদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান জানানো হবে। মরণোত্তর দেহদানে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে এটিকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

প্রয়াতের পুত্র সাঈদ হোসেন তমাল বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা সর্বস্ব ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে গেছেন। বহু মুক্তিযোদ্ধা পরবর্তীতে সাধারণ হিউম্যান হয়ে গেছেন। তিনি সাধারণ হিউম্যান হতে পারেননি। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে গেছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবদানের জন্য তিনি তার দেহদান করে গেছেন। 

মরদেহের এমবামিং প্রক্রিয়ার প্রারম্ভে এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানুর পরিচালনায় এবং এনাটমি বিভাগের সকল শিক্ষক, কর্মচারী ও রেসিডেন্টদের অংশগ্রহণে মরদেহের যথোচিত সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষার জন্য শপথ গ্রহণ করা হয়।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, দিল্লি হাইকমিশনে নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের মেয়ে সোনিয়া কৃষ্টি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, এনাটমি বিভাগের সকল শিক্ষক, রেসিডেন্টবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি এনাটমি বিভাগের নবনির্মিত মরচুয়ারি, প্ল্যাস্টিনেশন ল্যাব, স্কিল ল্যাব এন্ড মিউজিয়াম কমপ্লেক্সে সম্পন্ন করা হবে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে এক মাস সময় লাগবে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর