২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২১:২৯
সংসদে বিরোধী দলের অভিযোগ

‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইউজিসির সুপারিশের পরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইউজিসির সুপারিশের পরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না’

ফাইল ছবি

বিলের ওপর জনমত যাচাইয়ে প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদের বিরোধী দলের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, গত ১০ বছরে অন্তত ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগের অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি পাবার পর তা তদন্ত করে দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কিন্তু জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। একইসঙ্গে তারা আরো অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কমে গেছে এবং উচ্চশিক্ষা নিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী চাকরি পাচ্ছে না।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেহেরপুর বিলের ওপর আলোচনার সময় তারা এসব অভিযোগ করেন। 

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠালেও অনেককাংশ তা বাস্তবায়ন করা হয় না।’ 

এসময় সাংবাদিকদের কাছে করা ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যে ইউজিসির সুপারিশগুলো আমলে নেয় না, তা আমি আগে থেকেই বলে আসছি। অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে ইউজিসির কর্মকর্তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়, হুমকির শিকার হতে হয়। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে তদন্ত করে সেই সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠায়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সে প্রতিবেদন চাপা পড়ে থাকে। মাঝখান থেকে ওই তদন্ত কর্মকর্তা বিপাকে পড়েন’। 

তিনি জানান ইউজিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত ১০ বছরে অন্তত ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগের অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি পাবার পর ইউজিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা এসব অনিয়ম তদন্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। কিন্তু ব্যতিক্রম ছাড়া কোনো প্রতিবেদনেরই আলোর মুখ দেখায় না মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয় এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। ইউজিসির প্রতিবেদনে সেটি বলা হয়েছে।’
 
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৯ ভাগ শিক্ষার্থী বেকার থাকে। ৭-৮ ভাগ কারিগরি শিক্ষা নেয়, মাত্র ১৫ থেকে ২০ ভাগ চাকরি পায়। তারা চাকরি পাচ্ছে মাত্র গড়ে ৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে অর্থাৎ প্রতিদিন এক হাজার টাকা, দিন মজুরের বেতনের মতো।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন প্রয়োজন, সেখানে আমাদের দক্ষতাকে বাড়াতে হবে। ৮ থেকে ১০ লাখ লোক বিদেশে যায়। সেই ৮, ১০ লাখ বিদেশে যাওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কীি করেছে, কিছুই করেনি। তাদের ভাষা শেখায়নি, তাদের পাসপোর্ট জ্ঞান, ইমিগ্রেশন জ্ঞান দেওয়া হয়নি।’ 

জাতীয় পার্টির রওশনারা মান্নান বলেন, ‘দেশের উচ্চশিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেগুলোর মান কমে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এক সময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই মান নেই, পড়ে গেছে। অবশ্য মাধ্যমিকে কিছুটা মান বেড়েছে।’

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর