আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোটেক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনিদেরকে বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে পদোন্নতি দিয়ে চাকরি দিয়েছেন। বাপ ক্যা বেটা, তার পুত্র তারেক রহমান। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায়িত্বপালনকারী মাওলানা তাজউদ্দিনকে রাতের বেলা পাসপোর্ট করে ছন্মানামে বাংলাদেশ থেকে নিরাপদে পাকিস্তানে সরিয়ে দিয়েছেন। এরপরও তারেক রহমান কি প্রমাণ চান? আপনি যে হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, যদি বাংলার মানুষের উন্নয়ন অগ্রগতি শান্তি সমৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে চান; তাহলে বাংলার জনগণ রাজনৈতিকভাবে আপনাদের কবর রচনা করবে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন নানক। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপি সরকারের রাষ্ট্রীয় মদতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আলামত নষ্ট করা হয়েছিল দাবি করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারকে রহমানের বক্তব্য আর আপনাদের বক্তব্য হয়ে গেছে, ‘ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না’। আপনাদের হাস্যকর বক্তব্য শুনে মানুষ আজকে আপনাদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের আব্বাজান তারেক রহমান হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নানকে দিয়ে সমস্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিল। যে আর্জেস গ্রেনেড দিয়ে হামলা করেছিলেন, এই গ্রেনেড কেথায় তৈরি হয়? পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এই আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহার করে।
নানক বলেন, একুশে আগস্টের এক সপ্তাহ আগে ৫ নম্বরের সড়কে সুধাসদনের বাড়ির কাছে আপনার শ্বশুর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা তার বাড়িতে ১১ জনের তো বোরকা মানুষ ঢুকেছিল।
তারেক রহমান হাওয়া ভবন তৈরি করে সারাদেশে রক্তের হোলি খেলা খেলেছিলেন দাবি করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানক বলেন, কাজেই আজকে বাংলার মানুষ আপনাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। এরপর যদি সতর্ক না হন, যদি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলার মানুষের উন্নয়ন অগ্রগতি শান্তি সমৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে চান; তাহলে বাংলার জনগণ আপনারদের রাজনৈতিকভাবে কবর রচনা করবে দেশের মাটিতে।
দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে নানক বলেন, আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন। এটি শুধু মহিলা আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ না। আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ না; এই চ্যালেঞ্জ বাঙালি জাতির সাথে। এই উন্নয়ন এই অগ্রগতি চলবে না আবার সেই হাওয়া ভবন আসবে? আবার সেই বাংলা ভাই আসবে না আব্দুর রহমানরা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে দেশকে জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করবে?
বিএনপি যতই উসকানি দেউক আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাব জানিয়ে তিনি বলেন, তাই জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন সেই প্রার্থীকে নিয়ে জনগণের দরজায় দরজায় গিয়ে ভোট ভিক্ষা করে আমাদের সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করে আমাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে হবে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নিহত আইভী রহমান এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন স্মৃতিচারণও করেন আওয়ামী লীগ নেতা নানক।
আইভী রহমান সম্পর্কে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্মৃতিচারণ করেন তার মেয়ে তানিয়া বখত। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মৃত্যু নিয়েও এখন কিন্তু বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম উপহাস করেন। কতটা অমানবিক হলে কতটা রুচিহীন মানুষ হলে এই ধরনের উপহাস করতে পারে। ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক ছিল?
তিনি আরও বলেন, আপনাদের সত্য বলার সাহস নেই। কিন্তু অনর্গল মিথ্যা কথা বলবেন না। এটা আমরা যারা সেদিন স্বজন হারিয়েছি তাদেরকে উপহাস করা হয়। দয়া করে উপহাস করবেন না। সবকিছুর একটা শেষ আছে। আপনাদের উপহাসের বিচার নিশ্চয়ই আপনারা পাবেন।
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন শবনম জাহান শিলা।
সভায় আরও বক্তব্য দেন মহিলা আওয়ামী লীগের নাসিমা ফেরদৌস, আসমা জেরীন ঝুমু, মিনা মালেক, আনার কলি পুতুল, রোজিনা নাসরিন রোজিসহ অন্যান্যরা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত