বিশ্ব প্রাণী দিবস আজ শনিবার। প্রাণীদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবং প্রাণীদের প্রতি সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর ৪ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হয়। ‘প্রাণী বাঁচান, গ্রহ বাঁচান (সেভ এনিম্যালস, সেভ দ্য প্ল্যানেট)’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর বিশ্ব প্রাণী দিবসের ১০০তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড এনিম্যাল ডে ওয়েবসাইট বলছে, এবারের প্রতিপাদ্য মূলত প্রাণীকল্যাণ ও পৃথিবী নামক গ্রহের স্বাস্থ্যের সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দেয়।
জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং প্রাণীদের বাসস্থান ধ্বংস থেকে শুরু করে শিল্পভিত্তিক চাষ ও দূষণ সরাসরি পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলে। বাঘ বা নেকড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাণীগুলোকে রক্ষা করলে তাদের আশপাশে থাকা প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বিভিন্ন প্রাণীদের আবাসস্থল আপনা-আপনিই সুরক্ষিত থাকে। অর্থাৎ প্রাণীরা ভালো থাকলে পৃথিবীও ভালো থাকবে।
১০০ বছর আগে, ১৯২৫ সালে, পোলিশ সাংবাদিক, লেখক, সম্পাদক এবং অ্যাক্টিভিস্ট হেনরিখ জিমারম্যান প্রথমবার বিশ্ব প্রাণী দিবস উদযাপন করেন।
তিনি তখন জার্মানির বার্লিনে কাজ করতেন। তাঁর উদ্যোগেই ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ বার্লিন স্পোর্টস প্যালেসে প্রথম দিবসটি পালিত হয়। পরে ১৯৩১ সালে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এক সম্মেলনে ৪ অক্টোবরকে বিশ্ব প্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৩১ সালের মে মাসে ইতালির ফ্লোরেন্সে আন্তর্জাতিক প্রাণী সুরক্ষা কংগ্রেসের এক অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলো জিমারম্যানের প্রস্তাব অনুমোদন করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ৪ অক্টোবরকে বিশ্ব প্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৯৭০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে দুই-তৃতীয়াংশ বন্যপ্রাণী কমেছে। ১০০ বছরে বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে হারিয়ে গেছে ৩১ প্রজাতির প্রাণী। উভচর, সরীসৃপ, পাখি, স্তন্যপায়ীসহ অন্তত ২১৯ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে বিপন্নের তালিকায়।
সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি প্রাণী সুরক্ষার গুরুত্বকে আরো বাড়িয়েছে। ২০১২ সালের কেমব্রিজ ডিক্লারেশন অন কনশাসনেস অনুযায়ী, অনেক অ-মানব প্রাণীর কেবল অনুভব করার ক্ষমতাই নেই, তাদের নিজেদের এবং চারপাশের বিষয়েও সচেতনতা আছে।
এ ছাড়া গত বছর নিউ ইয়র্ক ডিক্লারেশন অন এনিম্যাল সেন্টিয়েন্স জানিয়েছে, প্রাণীরা আবেগ, ব্যথা ও কষ্ট অনুভব করে। সুতরাং পৃথিবীতে প্রাণের প্রতিটি প্রজাতিই গুরুত্বপূর্ণ।