শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

অফিস দখল নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অফিস দখল নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ

গুলিস্তানে পরিবহন শ্রমিকদের একটি কার্যালয়ের দখল নিয়ে বিরোধের জের ধরে গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী পথে আড়াআড়িভাবে বাস রেখে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার আটকে দেওয়ায় যানজটের সৃষ্টি —রোহেত রাজীব

ঢাকার গুলিস্তানে পরিবহন শ্রমিকদের একটি কার্যালয় দখল নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে পরিবহন শ্রমিকদের একটি পক্ষ গতকাল বেলা ১২টা থেকে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভার ও গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চের পাশে ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালের সামনের সড়কে বাস রেখে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। এই রমজানে যানজটের কবলে পড়ে পুরো রাজধানী। তিন ঘণ্টা পর পুলিশের মধ্যস্ততায় ফ্লাইওভারের যানচলাচল স্বাভাবিক হলেও আজ  পূর্বাঞ্চলে সব ধরনের বাস ধর্মঘট ডাকে শ্রমিকরা। বেলা ৩টার দিকে গাড়ি চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-সাউথ) মফিজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জানা গেছে, বঙ্গভবনের পূর্ব দিকে ৪৭/এ টয়েনবি সার্কুলার রোডে শ্রমিক ইউনিয়নের একটি কার্যালয়ের দখল নিয়ে শ্রমিকদের দুপক্ষের মধ্যে দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষ বাধে। এর আগের রাতে ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন তা দখল করে। অভিযোগ রয়েছে, এর নেপথ্যে ছিল বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কিছু নেতা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ নয়ন বলেন, যা হয়েছে তা আমরা কল্পনাও করতে পারেনি। আমাদের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এর নেপথ্যে থেকে উস্কানি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কতিপয় নেতা।

 এ ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিকরা আজ দেশের পূর্বাঞ্চলে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধের ডাক দিয়েছে।

যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের ওই সংঘর্ষের পর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকায়ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অফিস দখলের প্রতিবাদে একদল পরিবহন শ্রমিক মেয়র  মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের উপরে আড়াআড়ি করে বাস রেখে পথ আটকে দেয়। ফলে গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ীর পথে ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. মাইনুল হাসান জানান, যে কার্যালয় নিয়ে গোলমালের শুরু, তা এখন তালাবদ্ধ। কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। কার্যালয়টি নিয়ে তাদের সবার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলি বলেন, ২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের জাতীয়ভিত্তিক কোনো ইউনিয়ন থাকতে পারবে না। এর ফলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকারিতা ওখানেই  শেষ হয়ে গেছে। যে অফিসটি নিয়ে বিরোধ, সেটি ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের। আদালতের মাধ্যমেই এটি মীমাংসিত।

শ্রমিকদের এ বিরোধের বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, আমরা কোনো দখলবাজি চাই না। দ্রুততর সময়ের মধ্যে আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। ধর্মঘট প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর