মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সরে না দাঁড়ালে বিদ্রোহীদের বহিষ্কারের সতর্কতা বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে এতদিন মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হলেও এবার চিঠি দিয়ে চূড়ান্ত সতর্ক করেছে বিএনপি। এই চিঠিতে কাজ না হলে তাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের মতো সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয় ওই চিঠিতে। দুই সিটির প্রায় ৩০ বিদ্রোহীকে  নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অনুরোধ করা হয়েছে।

সূত্রমতে, প্রতিপক্ষের বাধা এবং প্রশাসনিক চাপের পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে চরম বেকায়দায় আছে বিএনপি। প্রতিকূল অবস্থা উত্তরণে বিদ্রোহীদের বসিয়ে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়। গত শনিবার এ নিয়ে বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠক করে উত্তরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান। দক্ষিণ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার গত শুক্রবার বৈঠক করেন বিদ্রোহীদের নিয়ে। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিল দুই সিটির নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সিনিয়র নেতারা।

সূত্রগুলো বলছে, উত্তর সিটির নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং সদস্য সচিব মো. শাহজাহান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনি নির্বাচনে স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে অংশ গ্রহণ করায় দল মনোনীত মেয়র প্রার্থীর বিজয়ে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। দলের বিজয় ও ঐক্য অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আপনার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে দল মনোনীত ও মেয়র ও সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে কাজে অংশ নিয়ে সহযোগিতা করবেন বলে বিএনপি মনে করে। এ বিষয়টি কার্যকর না হলে পরবর্তীতে সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে দক্ষিণের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, দক্ষিণের বিদ্রোহীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। সাতজনের মতো হতে পারে। বিদ্রোহীদের দল সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। না হলে তাদের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান জানান, দলের আদেশ মেনে বিদ্রোহীরা শেষ পর্যন্ত থাকবে না। যেমন, উত্তর সিটির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী হলেন হাবিবুর রহমান রাব্বী। ওই ওয়ার্ডে আরেক প্রভাবশালী নেতা কাফরুল থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইকরাম বাবু। বিএনপির হাইকমান্ড থেকে বাবুকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। এরই মধ্যে বাবু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি হয়েছেন। এমন করে সবাই দলের আদেশ মেনে নেব।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে বিদ্রোহী ১৮ জন : ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জামাল হোসেন, ৫ নম্বরে বুলবুল আহম্মেদ মল্লিক, ৬ নম্বরে আমজাদ হোসেন, হাবিবুর রহমান, রাহাদুল ইসলাম রিপন, ৭ নম্বরে গোলাম রাব্বানী, ৮ নম্বরে সোলায়মান খান দেওয়ান, ১৬ নম্বরে সৈয়দ আকরাম হোসেন, ১৮ নম্বরে কাজী আবদুল লতিফ, ২০ নম্বরে সেলিম আহমেদ রাজু, ২৩ নম্বরে আবুল মেসের, ২৫ নম্বরে হাশেম মিয়া ও জিয়াউর রহমান বাবু, ৩০ নম্বরে হাসেম মিয়া, ৩১ নম্বরে হাসিনা মোরশেদ কাকলী ও ফরিদ উদ্দিন ফরহাদ, ৩৭ নম্বরে আহমদ আলী এবং ৪৭ নম্বরে হেলাল তালুকদার।

দক্ষিণ সিটির ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে বিএনপির ১২ বিদ্রোহী : ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম, ১৫ নম্বরে আবু নাছের লিটন, ৩৭ নম্বরে সুমন ভূঁইয়া, ৩৯ নম্বরে মোজাম্মেল হক মুক্তা, ৪৬ নম্বরে মো. সোহেল ও ঢালী মামুনুর রশিদ, ৫১ নম্বরে কবির আহম্মেদ, ৫২ নম্বরে বাদল রানা, ৫৫ নম্বরে শহিদুল হক, ৫৯ নম্বরে খোরশেদ আলম খোকন, ৬১ নম্বরে শাহ আলম, এবং ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে নুরুউদ্দিন মিয়া।

 

সর্বশেষ খবর