অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আবির তালুকদার (১৪) জ্বর নিয়ে সকাল ১০টায় হাসপাতালে ভর্তি হলেও সারা দিনে কোনো ডাক্তার তাকে দেখতে আসেননি। দেননি কোনো চিকিৎসা। বিনা চিকিৎসায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। এই ঘটনা ঘটেছে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ তলার মেডিসিন (পুরুষ) ওয়ার্ড-৩ নম্বরে। সে ওই ওয়ার্ডের ২৯ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন ছিল দিনভর। গতকাল সরকারি ছুটির দিনে হাসপাতালে মিড লেভেলের ডাক্তার না থাকার রেওয়াজের কারণে বিনা চিকিৎসায় শিশুটি মারা যায় বলে অভিযোগ তার স্বজনদের। আবির জেলার উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের আকবর তালুকদারের ছেলে এবং স্থানীয় পঞ্চগ্রাম হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। দুই ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল বড়। আবিরের চাচা আবদুল মাজেদ জানান, তিন দিন ধরে জ্বর ছিল আবিরের। গতকাল সকাল ১০টার দিকে তাকে শেবাচিমের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সারা দিনেও মধ্যম সারির কিংবা বড় কোনো ডাক্তার ওয়ার্ডে রোগী দেখতে যায়নি। বিনা চিকিৎসায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এ জন্য ডাক্তারদের অবহেলাকে দায়ী করেছেন তিনিসহ তার স্বজনরা। ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আবিরকে ভর্তি করার পর তার স্বজনরা কর্তব্যরত সেবিকার কাছে চিকিৎসার জন্য নানা আবেদন নিবেদন করেন। তারা তাদের ‘ডাক্তার কক্ষে’ যেতে বলেন। ডাক্তার কক্ষে ছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসক। তারা রোগী দেখে তার অবস্থা খারাপ বলে চলে যান। এর পর ওই ওয়ার্ডের মেডিকেল অফিসার ডা. মেজবাকে খবর দেওয়া হয়। তিনি যখন ওয়ার্ডে পৌঁছেন ততক্ষণে রোগী মারা গেছে। ওয়ার্ডে মধ্যম সারির ডাক্তার না থাকায় বিনা চিকিৎসায় রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এ রকম তো হওয়ার কথা নয়। তারা তো নিজেদের মধ্যে রোস্টার করে নেয়, কে কখন ডিউটিতে থাকবে। বিষয়টি বিভাগীয় প্রধান ভালো জানেন।
ওয়ার্ডে সার্বক্ষণিক ডিউটি ডাক্তার থাকার বিধান রয়েছে। কর্তৃপক্ষ তো জানেই না যে কোনো ওয়ার্ডে ডিউটি ডাক্তার থাকেন না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।