নতুন বছরের শুরুতে রাষ্ট্রপতির প্রতি ‘জাতীয় সংলাপ’ ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের (বিএনএ) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
লিখিত বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনার বাংলা বিনির্মাণে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে উত্থান ঘটেছে, তাতে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নকামী দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তবে অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আবাসন, সামাজিক উন্নয়ন, কৃষি বাণিজ্য অর্থনীতিসহ সবক্ষেত্রেই আমাদের অনেক বড় বড় অর্জন থাকলেও দ্বিধাবিভক্ত জাতি হিসেবে আমরা মুখ থুবড়ে পড়ে আছি।
তিনি বলেন, জনগণের ক্ষমতায়নের রাজনীতিতে অব্যবস্থাপনায় ডুবে আছে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো। নির্বাচন কমিশন, জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় নির্বাচন, সর্বোপরি গণতন্ত্র ও আইনের শাসন- এসব আজ আমাদের গৌরবের অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। সংঘর্ষ, সংঘাত, মুখোমুখি পাল্টাপাল্টি বিদ্বেষ প্রতিহিংসা যেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ যেন কাউকে সহ্য করতে পারছি না। কবে দেখব আমরা সুস্থ রাজনীতি! কবে পাব সুশাসন? কবে হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী সাংবিধানিক উচ্চারণ ‘রাষ্ট্রের ক্ষমতার মালিক জনগণ’-এর বাস্তবায়ন।তিনি আরও বলেন, আইনের শাসনকে সুদৃঢ় করতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করতে উচ্চতর আদালতে তথা সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগ, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগ এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সুস্পষ্ট স্বচ্ছ নীতিমালা থাকতে হবে। এ নীতিমালার জন্য জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনে দেশে সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের গঠন প্রণালি নিয়ে জাতি আজ দ্বিধাবিভক্ত। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া আজ প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে না। সুষ্ঠু নির্বাচন বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
নাজমুল হুদা বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনকে দলীয়করণ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সরকারি কর্মচারী ও কর্মকর্তারা রাষ্ট্রের চাকরি করেন, কোনো দলীয় সরকারের নয়। এক্ষেত্রে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখতে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। এ ছাড়াও সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর পুনরায় গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত হওয়ার প্রশ্নে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে।