বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

১ কোটি লিটার ভোজ্য তেল ও ৮ হাজার টন ডাল কিনবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন রমজান উপলক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৮ হাজার টন ডাল কিনবে সরকার। এতে মোট খরচ হবে ২৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ৩২০ টাকা। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৪ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার তেল ও ৭৩ কোটি ২৮ লাখ ৩২০ টাকার ডাল। গতকাল কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, সভায় মোট ১৫টি এজেন্ডা ছিল, যার সবগুলো পাস হয়েছে। এর মধ্যে আটটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের। বিদ্যুতের দুটি, বাণিজ্যের দুটি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের একটি করে।

তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

মেঘনা এডিবল অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে ১৯৪ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকায় এ তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার তেলের দাম পড়বে ১৭৬ টাকা ৮৮ পয়সা, যার আগের দাম ছিল ১৭৭ টাকার মতো।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য এক প্রস্তাবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে সরকার। তুরস্কের আরবেল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক এএস কুমহুরিয়াত, বুলরেন্ট, নং ৭৩/৪, ৩৩২৮১, কাজনলি, মেরসিনের স্থানীয় এজেন্ট বিআইএনকিউর কাছ থেকে ৭৩ কোটি ২৮ লাখ ৩২০ টাকায় এ ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি ডালের দাম পড়বে ৯১ টাকা ৬০ পয়সা।

এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করে সরকার। এতে খরচ পড়ে ১৯৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ১৯ জানুয়ারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৮ হাজার টন ডাল কেনে সরকার। এতে মোট খরচ হয় ২৭৪ কোটি ১৬ লাখ ৯৬ হাজার ৮০০ টাকা।

উল্লেখ্য, ফ্যামিলি বা পরিবার কার্ডের আওতায় একজন কার্ডধারীর কাছে সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি পিঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, ১ কেজি মসুর ডাল ৬৫ টাকা ও প্রতি কেজি পিঁয়াজ ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকা ও টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়-সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোয়।

বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডলার-সংকট কমলে ফের ফল আমদানিতে এলসি (ঋণপত্র) খোলার অনুমতি দেওয়া হবে। রমজানের জন্য ফল আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে, এলসি খোলা যাচ্ছে না, ফলের দাম দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে অথচ রোজায় ফলের চাহিদা থাকে ব্যাপক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফল তো আমাদের দেশে প্রচুর হচ্ছে। এখন আমাদের দেখতে হচ্ছে, যাতে বৈদেশিক মুদ্রায় অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। এ ছাড়া দেশে যে ফল উৎপাদন হচ্ছে, সেটিরও একটি মূল্য পাওয়া দরকার। যে জন্য এটি (এলসি) একটু রেসট্রিক্ট (সীমিত) করা হয়েছে। সময় ভালো হলেই খুলে দেওয়া হবে। এখন দরকার ডলার সেভ (সংরক্ষণ) করা। আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে যেটি অপরিহার্য, সেটিতেই বেশি জোর দিচ্ছি। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের ফলের প্রচুর ফলন হচ্ছে। আর নিজেদের পণ্যেরও ভালো দাম পাওয়া দরকার। পরিস্থিতি একটু ইমপ্রুভ (উন্নতি) করলে সেটি (এলসি) খুলে দেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর