রবিবার, ২১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সিদ্দারামাইয়া উপমুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার

কলকাতা প্রতিনিধি

দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সিদ্দারামাইয়া। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসলেন ৭৫ বছর বয়সী জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিবিদ। এর আগে ২০১৩ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হন সিদ্দারামাইয়া। এ দিন উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রাজ্যটির কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার। গতকাল কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর কান্তিভেরা স্টেডিয়ামে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। তাদের শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল থোয়ারচাঁদ গেহলট। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি নতুন মন্ত্রিসভায় ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন কংগ্রেসের আরও আট বিধায়ক। এরা হলেন ড. জি পরমেশ্বর, কে জে জর্জ, কে এইচ মুনিয়াপ্পা, সতীশ জারকিহোলি, রামালিঙ্গ রেড্ডি, প্রিয়াঙ্ক খাড়গে, এমবি পাতিল ও জামির আহমেদ। এ দিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভঢরা, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ও দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাঝাগাম (ডিএমকে) প্রধান এম কে স্টালিন প্রমুখ। মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপল ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) প্রধান শারদ পাওয়ার, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) প্রধান ফারুক আবদুল্লাহ, অভিনেতা কমল হাসান প্রমুখ।

তবে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি এদিন উপস্থিত ছিলেন না। মমতার বদলে উপস্থিত থাকেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘রাজ্যে কংগ্রেসকে জিতিয়ে আনার জন্য আমি কর্ণাটকের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলাম এবং গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ কারণে আমাদের এই জয়। গত পাঁচ বছরে বিজেপির শাসনকালে কর্ণাটকের মানুষকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। নির্বাচনী মেনিফেস্টো অনুযায়ী আমরা আমাদের পাঁচটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করব।’

কর্ণাটক বিধানসভার ফল বেরোনোর পরই মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। একদিকে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া, অন্যদিকে রাজ্যটির কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার। মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার জন্য দলের হাইকমান্ডকে একরকম চাপ দিতে থাকেন শিবকুমার। তার দাবি ছিল, ২০১৯ সালে কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে প্রায় পাঁচ বছর ধরে দলকে নতুন করে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানো এবং সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে তাদের বিপুল জয়ের পেছনে রয়েছে তার অবদান। অন্যদিকে দলের বেশির ভাগ বিধায়কেরই সমর্থন ছিল দেশের রাজনীতিতে পাঁচ দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সিদ্ধারামাইয়ার পক্ষে।

শুধু তা-ই নয়, গত ৪০ বছরে রাজ্যটিতে পাঁচ বছরের সম্পূর্ণ মেয়াদ পূর্ণ করা একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী হলেন সিদ্ধারামাইয়া। এমনকি কর্ণাটকের রাজনৈতিক ইতিহাসে দেবরাজ উরষের পর সিদ্ধারামাইয়া হলেন দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী, যিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার কার্যকালের মেয়াদ সম্পূর্ণ করেছেন। ১০ মে বিধানসভা নির্বাচনে ২২৪ আসনের মধ্যে ১৩৫টি আসন পেয়ে বিজেপিকে উৎখাত করে কংগ্রেস। পাশাপাশি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে উঠে আসে তারা। ৬৬ আসন নিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় এবং ১৯ আসনে জয় পেয়ে তৃতীয় হয় জেডি-এস।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর