গ্রিস সরকার অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য সাত বছর বসবাসের পর বৈধতা পাওয়ার যে সুযোগ ছিল, তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২৮ মে (বুধবার) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তার ভাষ্য অনুযায়ী, অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধ করতে হবে। যেসব আশ্রয়প্রার্থী প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন, তাদের দ্রুত নির্বাসনের জন্য কঠোর আইন আসছে। নতুন করেও অবৈধভাবে গ্রিসে এসে আর কেউ বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবে না। এই ঘোষণায় গ্রিসে বসবাসরত হাজারো অনিয়মিত বাংলাদেশি অভিবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চরম হতাশা ও উদ্বেগ। অনেকেই এত দিন সাত বছরের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহে সময় নিচ্ছিলেন, ভবিষ্যতের কোনো বৈধতা প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার আশায়। বাংলাদেশ সরকারের উচিত অবিলম্বে উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি তুলে ধরা এবং অনিয়মিত প্রবাসীদের স্বার্থরক্ষায় কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা গ্রিক সরকারের কাছে অনুরোধ জানাতে থাকব যেন তারা অনিয়মিত বাংলাদেশিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হন এবং তাদের একটি ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয় বৈধতার আওতায় আসার জন্য।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, তিনি চলতি সপ্তাহেও গ্রিসের উপমন্ত্রী (শ্রম), অভিবাসন সংক্রান্ত সচিব জেনারেল এবং অভিবাসন বিভাগের স্থায়ী সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি অভিবাসী বাংলাদেশিদের বিষয়ে তাদের সঙ্গে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
নতুন আইনের কঠোরতা : গ্রিসের অভিবাসনমন্ত্রী মাকিস ভোরিদিস স্থানীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘নতুন আইনের খসড়ায় অনিয়মিত বসবাসের জন্য পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। জুনে সংসদে বিল উত্থাপনের কথা রয়েছে।’
২০২২ সালে গ্রিস সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশিকে পাঁচ বছর মেয়াদি রেসিডেন্স পারমিট দেয়। ২০২৩ সালেও একটি উন্মুক্ত বৈধতা প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা সুযোগ পান। এখনো বহু বাংলাদেশি অনিয়মিত অবস্থায় রয়েছেন। অনিয়মিত বাংলাদেশির সঠিক সংখ্যা না জানা গেলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হাজারেরও বেশি হবে। তবে গ্রিস সরকারের তথ্য অনুযায়ী গ্রিসে বর্তমানে বৈধ ২৪ হাজার ৭৫ জন বাংলাদেশি আছেন।