ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান, সিকদার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদারের তিন ছেলেমেয়ের থাইল্যান্ডে মালিকানাধীন সাত কোম্পানির ১৩২ কোটি ৭২ লাখ টাকার সম্পত্তি অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন। দুদকের আবেদনে বলা হয়, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার, তাঁর পরিবার ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সরকারি অর্থ তছরুপ, ঘুষ গ্রহণ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় সাত সদস্যের একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের তদন্ত চলাকালে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা বিদেশে অবস্থিত তাঁদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এতে তদন্ত প্রক্রিয়া বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের স্বার্থে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এসব সম্পত্তি জব্দ করা জরুরি। এ কারণে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ অনুযায়ী থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সিকদার পরিবারের মালিকানাধীন একাধিক স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ ও জব্দ করা আবশ্যক।
অবরুদ্ধ ও জব্দের আদেশ হওয়া এসব কোম্পানির রেজিস্ট্রিকৃত সম্পত্তির পরিমাণ ৩৫ কোটি ৩০ লাখ থাই বাথ; যা ১৩২ কোটি ৭২ লাখ টাকার সমমূল্য।
সিকদার পরিবারের গড়া সিকদার গ্রুপের ব্যবসা ছড়িয়ে আছে ব্যাংক ও বিমা, বিদ্যুৎ, ইকোনমিক জোন, অ্যাভিয়েশন, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো নানান খাতে। সহযোগী কোম্পানির মধ্যে রয়েছে পাওয়ার প্যাক পোর্টস, পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন, সিকদার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস, সিকদার রিয়েল এস্টেট ও মাল্টিপ্লেক্স হোল্ডিংস।
জয়নুল হক সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মারা যান। তাঁর ছেলে রন হক ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলে রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে দুটি মামলা করে দুদক। রন হক এর আগে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন।