ভারতের ইন্দিরা শাসনামলের বহুল আলোচিত স্বর্ণমন্দির খ্যাত অমৃতসর আসনের ভোটযুদ্ধে অরুণ জেটলি, নাকি অমরেন্দ্র নাথ হাসবেন শেষ হাসি? নরেন্দ্র মোদি বা বিজেপি সরকার গঠিত হলে অরুণ জেটলির কাঁধেই পড়বে সাউথ ব্লকের দায়িত্ব। অর্থাৎ জেটলি হচ্ছেন ভারতের আগামী দিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতের রাজনীতির অন্দরমহলে এ জল্পনা-কল্পনা এখন তুঙ্গে। সবার দৃষ্টি এখন পাঞ্জাবের ভোট লড়াইয়ের দিকে। আগামীকাল ৩০ এপ্রিল পাঞ্জাব রাজ্যের ১৩টি আসনে হচ্ছে ভোটযুদ্ধ। এবারের ভোটযুদ্ধে কংগ্রেসের বিপর্যয় ঘটলেও একমাত্র পাঞ্জাবেই কংগ্রেসের আসন বাড়তে পারে বলে মত দিয়েছেন অনেকে।
গত নির্বাচনে পাঞ্জাবের আটটি আসন দখল করেছিল কংগ্রেস। এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি নয়, আঞ্চলিক আকালি দলের পাঁচটি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। বিজেপি পিছিয়ে থাকলেও অমৃতসর আসনে বিজেপির অরুণ জেটলি ও কংগ্রেসের ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র নাথের মধ্যে ভোটযুদ্ধ বাঘ-সিংহের লড়াইয়ে পরিণত হচ্ছে। শেষ হাসি কে হাসবেন কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন না। এক সময়ের ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র নাথ মিত্র বাহিনীর হয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব রাখায় বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা সম্মাননা পদক দিয়েছিল। অন্যদিকে অরুণ জেটলি হচ্ছেন বিজেপির সেই নেতা- যাকে অনেকেই বলেন, কূটকৌশল বা রণকৌশল নির্ধারণে তিনিই সেরা। নরেন্দ্র মোদির কাছের মানুষও তিনি। রাজ্যসভায় তিনি রয়েছেন, এবার প্রথম তিনি লোকসভায় লড়ছেন নরেন্দ্র মোদির কারণে। বিগত নির্বাচনে এ আসনে বিজেপির একসময়ের ক্রিকেট তারকা নবজ্যোত সিং সিধু বিজয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু এবার বিজেপি তাকে মনোনয়ন দেয়নি অরুণকে লোকসভায় আনার জন্য। 'অরুণ জেটলি জিতলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হারলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মন্তব্য করে পর্যবেক্ষকরা বলেছেন কংগ্রেস ক্ষমতায় আসছে না। ভোটের ফলাফল-উত্তর রাজনৈতিক কূটকৌশলে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর আসনের কাছাকাছি এসে ছিটকে পড়লেও সরকার গঠনে আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে বিজেপিই থাকবে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়। সেই ক্ষেত্রে অরুণ জেটলি হচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এমনকি রাজনীতির অন্দরমহলে নরেন্দ্র মোদি ও রাহুল গান্ধীর নাম যেখানে ভারতের ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলোচিত হচ্ছে, সেখানেও অরুণ জেটলির নাম ঠাঁই পাচ্ছে। অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে উগ্রপন্থি শিখদের দমন করতে গিয়ে ভারতের গণতন্ত্রের মহান নেত্রী ইন্দিরা গান্ধী সেনা অভিযান চালিয়েছিলেন। তারই পরিণতিতে ভারতের রাজনীতিতে ঘটেছিল বিয়োগান্তক ঘটনা। শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন আধুনিক ভারতের দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের ইন্দিরা গান্ধী। স্বর্ণমন্দির খ্যাত অমৃতসরের ভোটযুদ্ধের দিকেই এখন দিলি্লর রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি।