রাত পোহালেই ভারতের নবম তথা শেষ দফার ভোটপর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এই পর্যায়ে ভারতের তিনটি রাজ্যে ৪১টি লোকসভা আসনে ভোট নেওয়া হবে। এরমধ্যে উত্তরপ্রদেশের ১৮টি, পশ্চিমবঙ্গের ১৭টি এবং বিহারের ৬টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে।
আগামীকাল সোমবারের ভোটে সবার নজর থাকবে বারাণসীর দিকে। কারণ এখানে নরেন্দ্র মোদি দাঁড়িয়েছেন। তার বিরুদ্ধে লড়ছেন আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও কংগ্রেসের অজয় রাই। বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও তাই ভিড় জমিয়েছেন বারাণসীতে।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন, তিনি রেকর্ড ভোটে হারাবেন নরেন্দ্র মোদিকে এবং দ্বিতীয়জনের জামানত জব্দ হবে!
পশ্চিমবঙ্গে আগামীকাল যে আসনগুলিতে ভোট নেওয়া হবে সেইগুলো হলো- বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রাণাঘাট, বনগাঁ, বারাকপুর, দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা দক্ষিণ, কলকাতা উত্তর, তমলুক, কাঁথি এবং ঘাটাল।
সোমবারের ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কাছে অ্যাসিড টেস্ট। কারণ সারদা কেলেঙ্কারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যারা, তাদের সিংহভাগই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ। পঞ্চায়েত ভোটেই ইঙ্গিত মিলেছিল, এই তিন জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুঠি শিথিল হচ্ছে।
এই ১৭টি আসনের মধ্যে কৃষ্ণনগর ও দমদম পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে বিজেপি। এই দুই আসনে দলের প্রার্থী যথাক্রমে সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ও তপন শিকদার।
এ ছাড়া বহরমপুর, যাদবপুর ও ঘাটালের ওপর বিশেষ নজর থাকবে। কারণ মোদি-হাওয়ায় কংগ্রেস হেভিওয়েট অধীররঞ্জন চৌধুরী বহরমপুর ধরে রাখতে পারেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
যাদবপুর থেকে গতবার জিতেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কবীর সুমন। কিন্তু অচিরে দলের সঙ্গে তার বিবাদ শুরু হওয়ায় তিনি একঘরে হয়ে পড়েন। সংসদ সদস্য থাকার সময় তিনি তেমন কাজ করেননি বলেও অভিযোগ ওঠে। এবার তার জায়গায় দল প্রার্থী করেছে সুগত বসুকে। তবে তিনিও কতটা এলাকায় সময় দেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম।
সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী তাই মনে করছেন, এবার তিনি জিতবেন। লড়াইটা তাই হাড্ডাহাড্ডি।
ঘাটালের ওপরও নজর থাকছে, কারণ এখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের 'পাগলু' হার্টথ্রব দেবকে। দেবের জনপ্রিয়তা বিপুল। বিশেষত তরুণীদের মধ্যে। এই জনপ্রিয়তার প্রতিফলন ইভিএমে কতটা পড়বে, সেটা দেখতে হবে।
ঘাটালে কংগ্রেসের প্রার্থী মানস ভুঁইঞা। বামেদের প্রার্থী হলেন সন্তোষ রানা। লড়াই তাই ত্রিমুখী।
কালকের ভোটের পর তিনদিন রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। ১৬ মে সকাল থেকে এক এক করে প্রার্থীদের ভাগ্য জানা যাবে। দুপুর নাগাদই পরিষ্কার হয়ে যাবে প্রবণতা। গোটা দেশের সম্পূর্ণ ফলাফল জানতে জানতে সন্ধ্যা পার হয়েও যেতে পারে।