হাজারো প্রবাসীর সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হলো অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্যারিস শহরের ঐতিহাসিক মানবাধিকার চত্বর রিপাবলিকে অস্থায়ী শহীদ মিনারে গানটি পরিবেশন করেন হাজারো প্রবাসী।
সম্মিলিত একুশ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে টানা চতুর্থবারের মত কর্মব্যস্ততার দিনেও সকল বয়সের বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস নিয়ে রিপাবলিকে একুশের সাজে জড়ো হন প্রবাসীরা। বাংলাদেশিদের পাশাপাশি এ অস্থায়ী শহীদ মিনারে প্রবাসীদের সাথে ফুল দিতে আসেন অনেক বিদেশিরাও। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার হাতে হাতে ছিল ফুল। রিপাবলিকে শহীদ মিনার ও এর আশপাশ এলাকা হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য।
শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে মহান একুশ উদযাপন কর্মসূচির শুভ সূচনা করেন সম্মিলিত একুশ উদযাপন কমিটির নেতারা। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী ও সাধারণ মানুষ। পরে একে একে ফুল দিয়ে জাতির মহান সন্তানদের স্মরণ করেন তারা। পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় শহীদ মিনারে আসা মানুষের স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। অনেকে একুশের গান গেয়ে শহীদদের স্মরণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পুরোটা সময় শহীদ মিনারে আসা বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী, সাধারণ মানুষ স্লোগানে স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে রাখেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনার ঘিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
দিবসটি পালনে র্যালি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও হাজারো কণ্ঠে একুশের গান, কবিতাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মহান একুশ উদযাপন করা হয়। মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের লক্ষ্যে শহীদ মিনারের দিকে ধীরলয়ে এগিয়ে যায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আগামী প্রজন্ম বাংলা ভাষা অর্জনে ও আমাদের গৌরবান্বিত ইতিহাস জানতে এবং ধারণ করতে পারবে এ রকম আয়োজনের মাধ্যমে বলে জানান আয়োজকরা। পাশাপাশি জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা বাংলার দাবি ও প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সকল সংগঠনকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন