রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির পরিক্রমা অনুসরণের মাধ্যমেই সম্ভব নিউইয়র্কে স্থায়ী শহীদ মিনারের স্বপ্ন পূরণ করা। উল্লেখ্য, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনের সীমানা দেয়ালের ভেতরে অর্থাৎ প্রবেশ পথেরই একপাশে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে, যার উদ্বোধন হয়েছে এবারের একুশে-তে। একইভাবে নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানেও নিজস্ব ভবন ক্রয় করা দরকার, যে ভবনের সামনে অথবা যে কোন পাশে খোলা জায়গা থাকবে এবং সেখানেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা যাবে।
প্রবাসীরা এমন দাবি জানিয়ে আসছে কন্স্যুলেট ভবন ক্রয়ের পরিকল্পনার মধ্যেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ রয়েছে নিজস্ব ভবনে কন্স্যুলেট জেনারেল অফিস স্থাপনের। দেড় দশকেরও অধিক সময় অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু পছন্দের ভবন (?) খুঁজে না পাওয়ায় আজও তা দৃশ্যমান হয়নি।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে বিল পাশের মাধ্যমে যে কোনো পার্কে শহীদ মিনার নির্মাণের পথ সুগম করার শক্তি এখনও কমিউনিটিতে অর্জিত হয়নি। কারণ, এই সিটিতে শহীদ মিনারের মত স্থাপত্য নির্মাণের বিপক্ষে বিধি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বহুপার্কের স্মৃতিসৌধ অথবা ইতিহাসের নায়কদের স্থাপত্য ভেঙে ফেলার দাবি উঠেছে। অনেককিছু গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ অবস্থায় শহীদ মিনার স্থাপনের অনুমতি আদায় করা একেবারেই অসম্ভব।
নিজস্ব ভবনে কন্স্যুলেট অফিসের প্রত্যাশা পূরণের মধ্যেই যাতে জাতিসংঘের শহরে শহীদ মিনারের স্বপ্নও পূরণ হয় সেজন্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে সোচ্চার হওয়া জরুরি।
স্মরণ করা যেতে পারে, সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিদিন এ প্রসঙ্গের অবতারণা পুনরায় করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দর একটি ভবন খুঁজে দিতে প্রবাসীদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। কন্স্যুলেট অথবা দূতাবাসের কর্মকর্তাগণের সহযোগী হয়ে ভবন খুঁজে দিতে এ আহ্বানে সাড়া দেয়া জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মধ্য ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে একটি টিম নিউইয়র্কে আসার কথা ছিল খুঁজে পাওয়া কয়েকটি ভবন পরিদর্শন এবং মূল্য যাচাই করার জন্যে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইতিপূর্বে, টেক্সাসের হিউস্টন, ক্যালিফোর্নিয়ার লসএঞ্জেলেস, নিউজার্সির প্যাটারসনে স্থায়ী শহীদ মিনার হয়েছে। এবার তালিকায় যুক্ত হলো ওয়াশিংটন ডিসি। ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’র স্বীকৃতি প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের শহরে স্থায়ী একটি শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। অথচ কমিউনিটি ঐক্যবদ্ধ না হওয়ায় সিটি কাউন্সিল কিংবা রাজ্য পার্লামেন্টে বাংলাদেশিরা আসন গড়তে না পারায় অনেক কিছুই আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও নিউইয়র্কে প্রবাসীদের বড় একটি অংশ সিটিজেনশিপ নিয়েছেন এবং ভোটার হিসেবেও তালিকাভুক্ত হয়েছেন। দলমত-আঞ্চলিকতার ঊর্ধ্বে উঠে জাতিগতভাবে ঐক্য গড়তে পারলে জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, ওজনপার্ক, ব্রঙ্কস এবং ব্রুকলীন থেকে সিটি কাউন্সিলম্যান/ স্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান স্টেট সিনেটর পদে জয়ী হওয়া কঠিন কোনো ব্যাপার নয় বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম