১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০৯:১৩

সম্প্রীতির বন্ধনে যুক্তরাষ্ট্রে দুর্গোৎসব সমাপ্ত

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

সম্প্রীতির বন্ধনে যুক্তরাষ্ট্রে দুর্গোৎসব সমাপ্ত

সম্প্রীতির বন্ধনে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ওয়াশিংটন মেট্র এলাকা, ক্যালিফোর্নিয়া, জর্জিয়া, টেক্সাস, মিশিগানসহ সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করলেন। প্রতিটি মণ্ডপ ঘিরেই হিন্দুদের সাথে মুসলমান, খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধরাও ছিলেন সরব। পূজা অর্চনা, কথা, কবিতা, নাচ-গান আর উলুধ্বনির প্রতিটি পরতেই উচ্চারিত হয়েছে মানবতার জয়গান, করোনা মহামারি থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি-বিরোধী স্লোগানও উঠেছে কোন কোন মণ্ডপে। 

নিউইয়র্কে শ্রীকৃষ্ণ মন্দির, ওঁম শক্তি মন্দির, দিব্যধাম এবং গুলশান ট্যারেসে অনুষ্ঠিত পূজা-অর্চনা পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ’৭১-এর মহাসচিব লেখক-সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি অভিভূত, বিস্মিত সকল ধর্মের বাঙালিদের মধ্যেকার সম্প্রীতির বন্ধন দেখে। প্রতিটি মণ্ডপেই অভাবনীয় সে দৃশ্য মূলত: বাঙালির হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যকেই মহিমান্বিত করছে।’ 
 
পূজা মন্ডপ পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বিবৃতিকালে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়াও গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ধর্মীয় সম্প্রীতির ঘটনাবলি অবলোকন করে। তিনি প্রবাসের বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন করোনা ভীতি থেকে সকলকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ক্ষেত্রে ব্যাপক আয়োজনে পূজা-উৎসবের ব্যবস্থা করায়।

১৫ অক্টোর ছিল বিজয়া দশমী। শিশু-কিশোরসহ সকল বয়সী ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা নতুন পোশাকে পূজা-মণ্ডপে হাজির হয়ে সিঁদুর দান উৎসবে মেতে উঠেন। ছিল বিষাদের ছায়াও। উল্লেখ্য, কেবলমাত্র নিউইয়র্ক সিটিতেই ১৭টি পূজা মণ্ডপ হয়েছিল। লক্ষাধিক প্রবাসী ৫ দিনের নানা আয়োজনে অংশ নেন বলে সংশ্লিষ্টরা উল্লেখ করেন। 

একুশে পদকপ্রাপ্ত কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় পূজা উপলক্ষে নিউইয়র্কের সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের উৎসাহ-উদ্দীপনার প্রশংসা করে বলেন, বাঙালিত্ব জীবনের প্রতিটি পর্বে লালনের পাশাপাশি প্রবাস প্রজন্মেও তা প্রবাহিত করতে প্রতিটি অভিভাবকই বদ্ধপরিকর। প্রায় প্রতিটি পূজাতেই ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এসেছিল নতুন পোশাকে। এই ধারা টিকিয়ে রাখতে হবে। 

উল্লেখ্য, তিথী অনুযায়ী এবারের দুর্গাপূজা চলে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে মণ্ডপ প্রাঙ্গন সবার জন্য উন্মুক্ত হয় এবং তা অব্যাহত থাকে মধ্যরাত অবধি। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পূজা অর্চনার পাশাপাশি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় দেশ ও প্রবাসের খ্যাতনামা শিল্পীরা অংশ নেন। সকলেই সৃষ্টিকর্তার দয়া প্রার্থনা করেছেন করোনা মহামারি থেকে মানবতাকে রক্ষার জন্যে। বিভিন্ন দেশে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠির মধ্যেকার দ্ব›দ্ব-সংঘাতের অবসানেও ভগবানের কৃপা প্রার্থনা করা হয় পূজা মণ্ডপ সমূহে। 

শ্রীকৃষ্ণ মন্দির, ওঁম শক্তি মন্দির, সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ ইউএসএ ইনক, শ্রীকৃষ্ণ ভক্তসংঘ ইউএসএ, উত্তর আমেরিকা হিন্দু কল্যাণ সংঘ, আমেরিকান বাঙালি হিন্দু ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ আন্তর্জাতিক মতুয়া মিশন, বাংলাদেশ সেবা সংঘ, শ্রী শ্রী রাধামাধম মন্দির, মহামায়া মন্দির এবং সত্যনারায়ণ মন্দিরে পূজা-মণ্ডপ স্থাপন করা হয়। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর