৫ জুলাই, ২০২২ ১০:২৩

শিক্ষক নাজেহালের বিচার দাবিতে নিউইয়র্কে র‌্যালি

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

শিক্ষক নাজেহালের বিচার দাবিতে নিউইয়র্কে র‌্যালি

‘নড়াইলে শিক্ষক লাঞ্ছনা এবং আশুলিয়ায় শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে; নিউইয়র্কে ৩ জুলাই অপরাহ্নে এক র‌্যালিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কিংবদন্তি শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প বাংলাদেশকে ছেয়ে ফেলেছে তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার মানুষ, স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। এবং বিচার নিয়ে কালক্ষেপণ করলে চলবে না। দোষীদের বিচার ইমিডিয়েট করতে হবে। অন্যথায় এহেন হামলা-নির্যাতন-বর্বরতা চলতেই থাকবে। এক পর্যায়ে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ছেড়ে চলে যাবে অন্যদের হাতে। অর্থাৎ বাঙালির আবার পরাজয় ঘটবে। কিন্তু আমরা সেটি চাই না। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সেই চার নীতিতে বিশ্বাসী। যে নীতিতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছিলেন’।  

উদীচী শিল্পী গোষ্ঠি যুক্তরাষ্ট্র সংসদ এবং যুক্তরাষ্ট্রস্থ মহিলা পরিষদের ব্যানারের সামনে অনুষ্ঠিত এ র‌্যালির সঞ্চালনা করেন উদীচীর জেনারেল সেক্রেটারি আলিমউদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন উদীচীর ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম। অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির আলী, অধ্যাপক সৈয়দ মিজানুর রহমান, লেখিকা নাসরীন চৌধুরী, এডভোকেট শেখ আকতারুল আলম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা শরাফ সরকার, মিনহাজ আহমেদ সাম্মু, প্রোগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি হাফিজুল হক,উদীচীর জ্যামাইকা ইউনিটের সভাপতি বাবুল আচার্য, ওবায়দুল্লাহ মামুন প্রমুখ। 

‘শিক্ষক হেনস্থার প্রতিটি ঘটনার সাথে সরকার দলীয় এমপি, নেতা-কর্মী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জড়িত। তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে’, ‘মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু শিক্ষকদের ওপর হত্যা-নির্যাতন নিগৃহিত হওয়া বন্ধ কর’, ‘শিক্ষা-সংস্কৃতির ওপর সরকারের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা-অবহেলা, উপেক্ষা বন্ধ হোক, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে পর্যাপ্ত বাজেট চাই। শিক্ষা সংস্কৃতিতে সাম্প্রদায়িক অনুপ্রবেশ বন্ধ কর, বই-পুস্তক সাম্প্রদায়িকরণ বন্ধ কর’ ইত্যাদি পোস্টার হাতে অংশগ্রহণকারি প্রবাসীর প্রায় সকলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চ্যালেঞ্জ প্রদানকারি জঙ্গি গোষ্ঠিকে প্রশ্রয় দানের জন্যে শেখ হাসিনা সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। শিক্ষক নাজেহালের ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের নিরবতার ধিক্কার দেন বক্তারা। 

ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত ‘প্রোগ্রেসিভ ফোরাম’র সেক্রেটারি গোলাম মর্তুজা অভিযোগ করেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছেন অথচ কোন বিচার নেই। এই বিচারহীনতা ও উদ্দেশ্যমূলক বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থেরর খপ্পড়ে পড়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু শিক্ষকরা মৌলবাদি গোষ্ঠি, তার সঙ্গে সরকার দলীয় একটি শ্রেণী ও প্রশাসনের যোগসাজশে সংখ্যালঘু শিক্ষকরা হত্যা-নির্যাতন ও নিগৃহিত হচ্ছেন। অন্যদিকে দেশের বুদ্ধিজীবী মহল, শিক্ষক সংগঠনগুলো প্রতিটি ঘটনায় নির্লিপ্ত ও নিষ্ক্রিয় থাকায় বর্বরতার বিস্তৃতি ঘটছে। এহেন ঘটনাপ্রবাহের অবসান চাই। সমাপনী বক্তব্যে কাশেম আলী বলেন, প্রতিটি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি। র‌্যালিতে বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরো ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, অবিনাশ আচার্য, খোরশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর