৯ আগস্ট, ২০২২ ১৬:০২
নিউইয়র্কে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী সমাবেশে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন

বঙ্গমাতা সাধারণের মাঝেও অসাধারণ এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

বঙ্গমাতা সাধারণের মাঝেও অসাধারণ এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অংশগ্রহণে 'মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা; অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা'  শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মধ্যদিয়ে ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়। 

প্রধান অতিথি ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বঙ্গমাতার জন্ম না হলে হয়ত স্বাধীনতার ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত মন্তব্য করে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও দূরদৃষ্টিসহ বহুমাত্রিক গুনাবলীর বিষয়ে আলোকপাত করেন। স্পীকার বলেন, দৃঢ়চেতা ও বলিষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী বঙ্গমাতা বাঙালীর সুদীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনের নেপথ্যে থেকে বঙ্গবন্ধুকে প্রতিটি পদক্ষেপে শক্তি, সাহস ও প্রেরণা যুগিয়েছেন। স্পীকার আরও বলেন, নির্লোভ ও শাশ্বত বাঙালী নারী হিসেবে তিনি অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। জাতির পিতা কারাগারে থাকাকালীন বঙ্গমাতা একদিকে যেমন দলের নেতাকর্মীদেও সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতেন এবং দলকে সংগঠিত করতেন, অন্যদিকে শক্তহাতে পরিবারের হাল ধরে মূল্যবোধ, শিক্ষা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সন্তানদের গড়ে তোলেন।

তিনি বঙ্গমাতাকে ‘‘বিরল ব্যক্তিত্ব” ও ‘‘সাধারণের মাঝেও অসাধারণ” অভিহিত করে তাকে নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। বঙ্গমাতার আদর্শ ও চেতনা সকল নারীর জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন। 

কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন এবং বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান, শহীদ সন্তান ফাহিম রেজা নূর, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সামসুদ্দিন আজাদ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আইরিন পারভিন, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, আইটি বিশেষজ্ঞ আজিজ আহমেদ, রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম ও বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি স্পীকারের নেতৃত্বে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে ডেপুটি কন্সাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান এবং কাউন্সেলর আয়েশা হক। অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দিবসটির তাৎপর্য এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গমাতার বহুমাত্রিক অবদান তুলে ধরে উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়। বক্তারা উল্লেখ করেন, তারই অনুপ্রেরণা ও অনুরোধে বঙ্গবন্ধু কারাবন্দী অবস্থায় লেখালেখি শুরু করেন এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মতো অমরগ্রন্থ রচনা করেন। কলে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
বঙ্গমাতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ১৯৭১-এর সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধি ও শান্তির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর