১৮ মার্চ, ২০২০ ১৩:১১

পর্দার আড়ালের নায়কের গল্প ‘কল-রেডি’

এস এইচ শুভ্র

পর্দার আড়ালের নায়কের গল্প ‘কল-রেডি’

এস এইচ শুভ্র

আজ বলবো পর্দার আড়ালের নায়কদের গল্প: ১৯৪৮ সালের কথা। বিক্রমপুরের শ্রীনগর থানার মঠবাড়িয়া গ্রামের সহোদর দুই ভাই দয়াল ঘোষ ও হরিপদ ঘোষ। পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে মাইকের ব্যবসা শুরু করলেন। 

প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল আই এম অলওয়েজ রেডি, অন কল এট ইয়োর সার্ভিস। বছরখানেক পরই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘কলরেডি’। বাংলার ইতিহাসের এক জ্বলন্ত সাক্ষী। বাঙালির প্রধান প্রধান আন্দোলন-সংগ্রামের সভা-সমাবেশে ছিল এই কলরেডি মাইক কোম্পানি। কেবল বাণিজ্যিক নয়, দেশ ও জনগণের স্বার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে বাকিতেও ফ্রি পর্যন্ত সেবা দিয়েছে কলরেডি। 

বিশেষ করে স্বাধীনতাযুদ্ধে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে কলরেডি বিনে-পয়সায় সেবা দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশীদার হয়েছিল। বিশ্বখ্যাত ৭ মার্চের জনসভায়ও ছিল কলরেডি'র মাইক। বঙ্গবন্ধুর শ্বাস-প্রশ্বাসে দুলছিল কলরেডির মাইক্রোফোন, কাঁপছিল মাইকগুলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পূর্ব ও পরবর্তী সব রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সভা সমাবেশে কলরেডির উপস্থিতি ছিল খুবই স্বাভাবিক। 

মওলানা ভাসানী, কমরেড মণি সিংহ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে-বাংলা এ কে ফজলুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবার জনসভা মানেই ছিল ‘কলরেডি’। বাংলাদেশের মাইক ব্যবসা জগতের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটিই ছিল শীর্ষে।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে কলরেডি'র যে মাইকগুলো ছিল, সেগুলো অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে। ওইদিন জনসভায় ব্যবহৃত মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ডটি আজো সংরক্ষিত আছে কলরেডি'র কাছে। সেদিন যেসব অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করা হয়েছিল তার মধ্যে ৭টি অ্যামপ্লিফায়ার এখনও আছে। আছে চারটি মাইক্রোফোন। 

জাদুঘরে এসব সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। -কলরেডি'র পরিচালকদের সম্মান ও কলরেডির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি। বিনম্র শ্রদ্ধা-পিতা।

লেখক : ঢাকা কলেজ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

সর্বশেষ খবর