শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

দেশের প্রথম লোহার খনি

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

দেশের প্রথম লোহার খনি

খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে দেশে প্রথম লোহার খনির সন্ধান মিলেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরের খনির সন্ধান সম্ভাবনার নতুন দিগন্তের হাতছানি দিচ্ছে।

দেশে প্রথমবারের মতো উন্নত মানের লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনির সন্ধান মিলেছে হাকিমপুর উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রামে। লোহার পাশাপাশি খনিটিতে মূল্যবান কপার, নিকেল ও ক্রোমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে বলে জানান জিএসবি কর্মকর্তারা।

লোহার খনি আবিষ্কারের খবরে ইতিবাচক সাড়া পড়ে স্থানীয়সহ সারা দেশে। এসব খনিজ উত্তোলনযোগ্য খনিতে পরিণত হলে, সেটা বাংলাদেশের আরেক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত রচনা করবে। দেখা দিয়েছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরির সম্ভাবনা। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির আশায় বুকও বেঁধেছেন এ অঞ্চলের মানুষ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। প্রথম লোহার খনির সন্ধান দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। পাশাপাশি এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে গিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাবেÑএমনটাই আশা এ অঞ্চলের মানুষের। 

এর আগে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ২০১৩ সালে হাকিমপুরের মুর্শিদপুরে কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। ২০১৩ সালে লোহা, চুম্বুকীয় খনিজ পদার্থ এবং চুনা পাথরের সন্ধান পাওয়ার পর এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের জরিপ কাজে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুরে কূপ খনন শুরু করে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। কূপ খনন করে পাওয়া নমুনা প্রায় দুই মাস ধরে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গত ১৮ জুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের (জিএসবি) কর্মকর্তারা। তিনটি শিফটে দিনরাত কাজ করছেন ৩০ সদস্যের একটি দল। বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের (জিএসবির) কর্মকর্তারা জানান, খনিটির ব্যাপ্তি ৬-১০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। নিশ্চিত হতে আরও ৫/৭টি এরকম ড্রিলিং করতে হবে।

খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গত ১৯ এপ্রিল দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ড্রিলিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। খনির এই ড্রিলিং কার্যক্রম চলবে আরও দুই থেকে তিন মাস।

বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি) এর উপ-পচিালক (ভূতত্ত্ব) মুহাম্মদ মাছুম জানান, বিশে^র যে কয়টি দেশে লোহার খনি আবিষ্কার হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের আকরিকের লোহার শতাংশ ৬৫% ভাগের উপরে। এখানে খনন কার্যক্রমে ১৩০০ ফুট গভীরতায় লৌহের আকরিকের সন্ধান পেয়েছি। ল্যাব এনালাইসিস করে বুঝতে পেরেছি, এখানে লোহার তিনটি আকরিক আছে। ম্যাগনেটাইট, হেমাটাইট, সিনেরাইটের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ১৩০০ ফুট থেকে শুরু করে ১৭৫০ ফুট পর্যন্ত গভীরতায় ৪০০ ফুটের ওপরে লোহার আকরিকের থিকনেস পেয়েছি। আয়রনের সঙ্গে এখানে মূল্যবান ধাতু কপারের, ক্রোমিয়ামের, নিকেলের উপস্থিতি রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর