প্রতি বছর আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস এলেই পাল্টে যায় এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র। পেয়ারা বিক্রির জন্য এখানে রয়েছে ভাসমান বাজার। প্রতিদিন কয়েক শ নৌকায় চাষিরা আসেন পেয়ারা বিক্রি করতে। এ ছাড়া পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে।
পেয়ারা পার্ক। নামটি শুনলে প্রথমে মনে হতে পারে এটি কী ধরনের পার্ক। সারা দেশে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন নামে ভিন্ন ভিন্ন পার্ক। তবে ব্যতিক্রমী পেয়ারা পার্কটি গড়ে উঠেছে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলায়। মূলত পেয়ারা বাগানের মধ্যেই নানা ধরনের বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে বলেই নামকরণ হয়েছে

জানা যায়, নেছারাবাদ উপজেলায় পেয়ারা বাগান দেখতে অনেক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সী মানুষ আসত। দেশের বাইরের পর্যটকও এখানে এসেছেন। পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনের সুবিধা দিতে এ এলাকায় গড়ে উঠেছে তিনটি পেয়ারা পার্ক। পেয়ারা বাগানের মধ্যেই এ পার্কগুলো স্থাপন করা হয়েছে। কয়েক শ একর জমিতে নিজস্ব অর্থায়নে এ তিনটি পার্ক গড়ে তুলেছেন স্থানীয়রা। পার্কগুলোর ভিতরে রয়েছে অর্ধশত বসার স্থান, শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে দোলনা। এ ছাড়াও রয়েছে নানা স্থাপনা। সড়ক ও নৌ উভয় পথেই পেয়ারা বাগানে ভ্রমণকালে এ পার্কগুলোতে বিশ্রাম ও বাড়তি বিনোদন সুবিধা নিতে পারবেন পর্যটকরা। প্রতি বছর আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস এলেই পেয়ারার কারণে পাল্টে যায় এ অঞ্চলের চিত্র। পেয়ারা বিক্রির জন্য রয়েছে এখানে ভাসমান বাজার। প্রতিদিন কয়েক শ নৌকায় চাষিরা আসেন পেয়ারা বিক্রি করতে। পেয়ারা কিনতে ট্রাক ও বড় বড় ট্রলার নিয়ে আসেন পাইকাররা। আর এ দৃশ্য উপভোগ করতে আসেন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় পর্যটকদের আগমন অন্য বছরের চেয়ে এ বছর অনেকটা বেশি। স্থানীয়রা জানান, এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ভাসমান হাট কুড়িয়ানা বাজার। আদমকাঠি বাজার, আতা- এসব পিরোজপুরের সন্ধ্যা নদী থেকে বয়ে আসা একই খালপাড়ে অবস্থিত। আটঘর এলাকার পেয়ারা চাষি শেখর মজুমদার জানান, আমাদের কয়েক প্রজন্ম পেয়ারা চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করি। এখানে পেয়ারার সঙ্গে পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন দিতে গড়ে ওঠা পার্কগুলো আমাদের পেয়ারা বাগানের সৌন্দর্য বাড়াবে। এ ছাড়া আমাদের অর্থনৈতিক লাভও হবে।