৪,০০০ আলোকবর্ষ দূরের একটি তারা ঘিরে পৃথিবীর মতো একটি পাথুরে গ্রহ আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এটি সৌরজগতের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করেছে। পৃথিবীর মতো ওজনের এই গ্রহটি ধবল বামন নামে পরিচিত একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। ধবল বামন মিথুন নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত।
গবেষণায় দেখা গেছে, ধবল বামন একটি তারার অবশিষ্টাংশ, যা জ্বালানির অভাবে বাইরের স্তরগুলোকে হারিয়ে ফেলে। এটি সূর্যেরও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নির্দেশ করে। সূর্য যখন লাল দৈত্যে পরিণত হবে, তখন এটি প্রসারিত হবে। এ সময় কোন কোন গ্রহ গ্রাস হবে, সেটিই মূল প্রশ্ন। বুধ ও শুক্রের গ্রাস হওয়া প্রায় নিশ্চিত। তবে পৃথিবীর সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ কি?
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলির গবেষকরা ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণায় কেএমটি-২০২০-বিএলজি-০৪১৪ নামক একটি সিস্টেম পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা একটি ধবল বামন নক্ষত্র এবং পৃথিবীর সমান আকারের একটি গ্রহ নিয়ে গঠিত। এই গ্রহটি নক্ষত্রটির চারপাশে পৃথিবী থেকে দ্বিগুণ দূরত্বে প্রদক্ষিণ করছে। গবেষণায় আরও একটি ব্রাউন ডোয়ার্ফ পাওয়া যায়, যা বৃহস্পতির তুলনায় প্রায় ১৭ গুণ বেশি ভারী।
গবেষণায় অনুমান করা হয়, সূর্য যখন লাল দৈত্যে পরিণত হবে, তার ভর হ্রাস পেলে গ্রহগুলো দূরের কক্ষপথে চলে যেতে পারে, ফলে পৃথিবী ধ্বংস থেকে রক্ষা পেতে পারে। গবেষক জেসিকা লু উল্লেখ করেন, ‘লাল দৈত্য পর্যায়ে পৃথিবীতে জীবন টিকে থাকবে কিনা তা অনিশ্চিত। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, পৃথিবী সূর্যের লাল দৈত্য রূপে গ্রাস হবে না।’
গবেষণার প্রধান লেখক কেমিং ঝাং জানান, ছয় বিলিয়ন বছর পর সূর্য লাল দৈত্যে পরিণত হলে পৃথিবী গ্রাস হবে কিনা, তা নিয়ে এখনো মতানৈক্য আছে। তবে আরও এক বিলিয়ন বছর পর পৃথিবীর মহাসাগর বাষ্পে পরিণত হবে, যা এক ধরণের গ্রিনহাউজ প্রভাবের কারণে ঘটবে।
যখন সূর্য লাল দৈত্যে পরিণত হবে, তখন সৌরজগতের বাসযোগ্য অঞ্চল বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের কক্ষপথের দিকে সরে যাবে। এর ফলে বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের চাঁদ, যেমন ইউরোপা ও ক্যালিস্টো, বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। ঝাং বলেন, মানবতা তখন সেখানেও স্থানান্তরিত হতে পারে। সূত্র : এনডিটিভি
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল