দেশের মশাবাহিত রোগের সার্বিক পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতির দিকে যাচ্ছে। মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়েছে। জলাবদ্ধতায় ঘেরা শহর, গ্রাম, পাবর্তাঞ্চলে মশার অবাধ বিচরণ থাকায় ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে এটা ব্যাপক আকার ধারণ করে মহামারি পর্যন্ত হতে পারে। তাই সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রতিরোধব্যবস্থা গ্রহণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তদারকি এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি না করলে ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জলাবদ্ধতা, জনসচেতনতার অভাব, বাড়ির আঙিনাসহ আশপাশ পরিবেশ পরিচ্ছন্ন না থাকায় মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিটি করপোরেশন/পৌরসভার উদ্যোগে ড্রেনসহ পুরো এলাকায় নিয়মিত মশক নিধনের ওষুধ ছিটাতে হবে। কলকারখানার বর্জ্য সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে। সিটি করপোরেশন পর্যায়ে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। গ্রাম পর্যায়ে এ ব্যবস্থা না থাকায় তারা সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছে।
আমাদের প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত পাইরেথ্রয়েড-জাতীয় উপাদান দিয়ে আধুনিক মশার কয়েল উৎপাদন করা, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখা এবং সেবামূলক পণ্য সরবরাহ করা। পাশাপাশি মানসম্পন্ন মশার কয়েল উৎপাদন করে এ দেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখা।
মশার কয়েল সহজলভ্য এবং ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ায় ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা ব্যবহার করা যায়। তাই গ্রাম পর্যায় পৌঁছিয়ে দিয়ে সেবামূলক পণ্য সরবরাহ করা আমাদের উদ্দেশ্য।
ডেঙ্গুজ্বর, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, জিকা ভাইরাসের জীবাণু বহন করা মশা নিয়ন্ত্রণ করতে মানসম্পন্ন কয়েল অধিক কার্যকর। ফলে বিএমসিএমএ’র আরও মানসম্পন্ন মশার কয়েল উৎপাদন করার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে মশার কয়েলের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন, বদ্ধ ঘরে ব্যবহার না করা, শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা এবং মশারির ভিতরে মশার কয়েল ব্যবহার না করার জন্য মশার কয়েলের মোড়কে বিজ্ঞাপনের ব্যবহার করতে হবে।
সর্বোপরি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিএমসিএমএ সদস্যরা শহরাঞ্চলসহ প্রতিটি গ্রামে এ সেবামূলক পণ্যটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে পারবেন। মশাবাহিত রোগে মৃত্যু কমাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ, জলাবদ্ধতা নিরসন, বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা। নাগরিকের সচেতনতার পাশাপাশি মানসম্পন্ন মশার কয়েল ব্যবহার করা। সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি আরও জোরদার করতে হবে।