বাফুফের শিডিউল ঠিক থাকলে মার্চে বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল মাঠে গড়াবে। ফুটবল ফেডারেশনের আয়োজনে এটিই একমাত্র টুর্নামেন্ট। প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপের বিলুপ্তি ঘটেছে বলা যায়। ১৯৯২ সালের পর এই টুর্নামেন্ট আর মাঠে গড়ায়নি। বলা হয় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে এই টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিল বলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে তা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। একই কথা বঙ্গবন্ধু কাপের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ২০১৫ সালে দীর্ঘ ১৬ বছর পর বঙ্গবন্ধু কাপ মাঠে নামে। অথচ কাজী সালাউদ্দিন ২০০৮ সালে বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ঘোষণা দেন এখন থেকে নিয়মিত ভাবে বঙ্গবন্ধু কাপ হবে। যাক ২০১৫ পর ২০১৬ সালেও এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এতে করে বাফুফে প্রশংসাও পেয়েছিল।
এবারও টুর্নামেন্ট হয়তো হবে। কিন্তু মার্চে শুরু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় কাটছে না। অবশ্য বাফুফে সভাপতি কিছুদিন আগেও সাংবাদিকদের জানান মার্চেই বঙ্গবন্ধু কাপ হবে। সালাউদ্দিনের মনে আছে কিনা জানিনা। তিনি ২০১৫ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে জোরালভাবে বলেছিলেন এখন থেকে প্রতি জানুয়ারি মাসেই বঙ্গবন্ধু কাপ হবে। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। যাক জানুয়ারি থেকে মার্চ কোনো ব্যাপার নয়। ব্যস্ততার কারণে টুর্নামেন্ট পেছাতেই পারে। প্রশ্ন উঠেছে মার্চেও হবে কিনা। এক মাসও বাকি নেই, জাতির জনকের নামকরণে টুর্নামেন্ট অথচ এনিয়ে তেমন ব্যস্ততা চোখে পড়ছে না। আগে কিন্তু অনেক আগে থেকে কোন কোন দেশ অংশ নেবে তা সালাউদ্দিনই জানিয়ে দিতেন। এটাও কোনো ফ্যাক্টর নয়, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ কখনো বড় মানের দল অংশ নেয়নি। এবার তার ব্যতিক্রম ঘটবে বলে মনে হয় না।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশের দুটি দল খেলবে। জাতীয় ও অনূর্ধ্ব-২৩ দল। এক মাস বাকি অথচ দুই দলের কোচ যে কে হবেন তা এখনো ঠিক হয়নি। প্রথমে শোনা যাচ্ছিল জাতীয় দলের কোচ হবেন জর্জ কোটান। কিন্তু তার আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সালাউদ্দিন বলেছেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির পছন্দ বাংলাদেশের কোচ। তাহলে কি দেশি কোচ দায়িত্ব পাচ্ছেন? কোচ নিয়োগের ব্যাপারটি দেখছে ন্যাশনাল টিমস কমিটি। তারা এখন পর্যন্ত কোচের ব্যাপারটি পরিষ্কার করে বলছে না। বুঝাই যাচ্ছে যিনিই কোচ হন না কেন প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন না। এমনিতেই ফুটবলের যে দুর্দশা এখন প্রশিক্ষণে ভালো কিছু কি আশা করা যায়? শুধু কি ফিটনেস পরীক্ষা দিলেই চলবে। অবশ্য টুর্নামেন্ট যদি পিছিয়ে যায় ভিন্ন কথা।আরেকটি বিষয় না বললেই নয়। গতবার টুর্নামেন্ট করে বাফুফে অবাক করা এক কাণ্ড ঘটিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে চ্যাম্পিয়ন নেপালকে ট্রফি দেওয়া হলেও তাদের প্রাইজমানি দেওয়া হয়নি। কোনো দেশে আন্তর্জাতিক ফুটবলে এ ধরনের লজ্জাকর ঘটনা ঘটেছে কিনা জানা নেই। জাতির জনকের নামে টুর্নামেন্ট। নেপাল যদি ফিফার কাছে নালিশ করত তাহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি কোথায় গিয়ে দাঁড়াত। সুতরাং এক্ষুণি এবার বঙ্গবন্ধু কাপ হোক না কেন সরকারের তদারকি থাকা দরকার। এই ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে।