আভাস মিলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেই। ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন বিসিবি কর্মকর্তারা। টেস্ট সিরিজে বিপর্যস্তকর পারফরম্যান্সের পর নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে মুশফিকুর রহিমকে। তার জায়গায় দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে সাকিব আল হাসানের হাতে। আভাস ও ইঙ্গিতকে সঠিক প্রমাণিত করেন বিসিবির নতুন পরিচালনা সাকিবকে নতুন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে। নাইমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাসুদ পাইলট, খালেদ মাহমুদ সুজন, হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ আশরাফুল, মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমের পর পুনরায় টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আর্ম ব্যান্ড পরলেন সাকিব। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল মনে করেন, টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে সাকিবই দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে যোগ্য ক্রিকেটার।
আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজে লড়াইয়ে ধারেকাছে যেতে পারেনি টাইগাররা। সিরিজ চলাকালীন মিডিয়ার সঙ্গে নানামুখী কথা বলে সমালোচিত হন অধিনায়ক মুশফিক। মিডিয়ার মুখোমুখিতে নানা ধরনের কথা বলে সমালোচনার জন্ম দিয়ে মুশফিক নিজের কবর নিজে খুঁড়ে নেন। যদিও তার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স বাজে ছিল না। হাফসেঞ্চুরি না করলেও দুই টেস্টের চার ইনিংসে দুই অংকের রান করেন। মুশফিককে টেস্ট নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সঠিক কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বিসিবি। এই সরিয়ে দেওয়াটাকে মেনে নিতে পারেননি দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান বুলবুল, ‘আমার মনে হয় না পারফরম্যান্সের জন্য মুশফিককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে সরিয়ে দেওয়ার অন্য কারণ আছে। শোনা যায়, মিডিয়ার সঙ্গে সে কথা বলতে পারে না। আমার বক্তব্য হচ্ছে, যদি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারেন না মুশফিক। তাহলে বিসিবির মিডিয়া কমিটি কেন আছে?’ প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানের মতে টেকনিক্যালি ক্রিকেটার মুশফিক। পারফরম্যান্সই তার প্রমাণ।
মুশফিকের কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়াটা যেমন মেনে নিতে পারেননি বুলবুল। তেমনি সাকিবের কাছে ফিরিয়ে দেওয়াটাকেও সমর্থন করেন তিনি। টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার মতো দেশে এখন সবচেয়ে যোগ্য ক্রিকেটার সাকিবকে মনে করেন ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ১৪৫ রানের ইনিংস খেলা বুলবুল, ‘আমি মনে করি সাকিবই নেতৃত্ব দেওয়ার সবচেয়ে যোগ্য ক্রিকেটার। এর আগেও সে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন আগের চেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ওয়ানডে, টি-২০, টেস্ট সব ধরনের ক্রিকেটেই বিশ্বের পরিচিত মুখ। নানা কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতাও অনেক। আমি মনে করি, তার এই অভিজ্ঞতা অনেক সহায়তা করবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে।’ সাকিব ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন ৯ টেস্টে। অধিনায়কত্বের অভিষেক টেস্টেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। পরের আট টেস্টে হেরে যায় টাইগাররা। সেবার তার কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নিয়েছিল বিসিবি। এবার মুশফিকের কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নিয়ে পুনরায় সাকিবের হাতে তুলে দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড।
এই কেড়ে নেওয়ার চর্চা দেশের ক্রিকেটের জন্য কতটা সুখকর হয়, সেটা সময় বলবে।