সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আত্মবিশ্বাস নিয়ে এশিয়া কাপে টাইগাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আত্মবিশ্বাস নিয়ে এশিয়া কাপে টাইগাররা

বাংলাদেশ আরও দুবার ক্রিকেট খেলেছে ‘মরু রাজ্য’ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ২৮ বছর আগে ১৯৯০ সালে প্রথমবার। সেবার খেলেছিল ছয় জাতির অস্ট্রেলেশিয়া কাপে। দ্বিতীয়বার ১৯৯৫ সালে পেপসি এশিয়া কাপে। এবারও আরব আমিরাত উড়ে গেল এশিয়া কাপে অংশ নিতে। আগেরবার বাংলাদেশের লড়াই শুধু অংশগ্রহণেই সীমাবদ্ধ ছিল। এবার মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে তামিম, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মুস্তাফিজরা ঢাকা ছেড়েছেন প্রথমবারের মতো এশিয়া জয়ের স্বপ্ন নিয়ে। গতকাল রাতে দুবাই উড়ে গেছেন মাশরাফিরা। অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় দলের সঙ্গী হননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক যোগ দিবেন দুবাইয়ে। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) মাঝপথে ঢাকায় এসে দলের সঙ্গে উড়ে গেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। স্টিভ রোডসের কোচিংয়ে ক্রিকেটাররা এবার সবাই স্বপ্ন দেখছেন এশিয়া কাপের শিরোপা জয়ের।

১৯৮৬ সাল থেকে এশিয়া কাপে খেলছে বাংলাদেশ। ৩২ বছরের পথ চলায় এখন কাপের অন্যতম দাবিদার টাইগাররা। গত ২০১২, ২০১৪ ও ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজক হয়ে দুবার ফাইনাল খেলেছে। এবার দুবাই ও আবুধাবীতে শিরোপা জিততে চাইছে গোটা দল। কিছুদিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-২০ ও ওয়ানডে সিরিজ জয়ী মাশরাফিরা এখন আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ‘দ্বীপ রাষ্ট্র’ শ্রীলঙ্কার। ২০ সেপ্টেম্বর আবুধাবীতে মুখোমুখি হবে আফগানিস্তানের। দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে মাশরাফিদের জিততে হবে ম্যাচ দুটি। অবশ্য একটি জিতলেও সম্ভাবনা থাকবে। তখন সমীকরণ দাঁড়াবে রান রেটের। টুর্নামেন্ট শুরু হতে এখনো ঢের বাকি। নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার বেশ সময় পেয়েছেন মাশরাফিরা। শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোড় গোটা দল। অথচ টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির ভাবনায় প্রথম ম্যাচ। দ্বীপ রাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচটির উপরই নির্ভর করছে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বেঁচে থাকা। তাই টাইগার অধিনায়ক পাখির চোখে দেখছেন প্রথম ম্যাচটিকে, ‘যে কোনো টুর্নামেন্টেই প্রথম ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। সবাই চ্যাম্পিয়নের কথা বলছেন। আমি আবার সেভাবে ভাবি না। আমার কাছে সবসময়ই যে কোনো টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিবেচনায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি আমার কাছে মহাগুরুত্বপূর্ণ।’

মরু রাজ্যে এর আগে ৫টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সবগুলো ম্যাচ খেলেছিল আইসিসি সহযোগী দেশ হিসেবে। ম্যাচগুলোর ফলাফল ছিল একপেশে। অস্ট্রেলেশিয়া কাপে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল বড় ব্যবধানে। এশিয়া কাপে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচগুলোও ছিল অস্তিত্ব রক্ষার। এখন বাংলাদেশ দুরন্ত ক্রিকেট খেলছে। নিয়মিত হারাচ্ছে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো দলগুলোকে। ধারাবাহিক বলেই এখন স্বপ্ন দেখছে শিরোপার। মাশরাফির চোখে প্রথম ম্যাচ। কোচ স্টিভ রোডস চাইছেন সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন, ‘আমাদের দলের সবাই মানসিকভাবে প্রস্তুত ভালো করার। ওয়েস্ট ইন্ডিজে দল ভালো করেছে। আমরা চাই এশিয়া কাপে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে।’   

বর্তমান দলটির কাছে আরব আমিরাতের মাটি অপরিচিত। যদিও আরব আমিরাত দেশটির বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে মাশরাফি, সাকিব, তামিমদের। অবশ্য দেশটি এবার ঘরের মাটিতে দর্শক। অপরিচিত কন্ডিশনের বিবেচনায় শুরুতে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেন নির্বাচক প্যানেল। শেষ সময়ে বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক সৌরভকে নিয়ে স্কোয়াড পূর্ণ করা হয়েছে। দলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন সিমিং অলরাউন্ডার আরিফুল হক, বাঁ হাতি পেসার আবু হায়দার রনি। শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখলেও দলে ইনজুরি রয়েছে। সাকিবের আঙ্গুলে অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। বিসিবি সভাপতির অনুরোধে সেটা এশিয়া কাপের পর করা হবে। হালকা ইনজুরি রয়েছে তামিম ও নাজমুল হাসান শান্তের। অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্টের বিশ্বাস এশিয়া কাপ শুরু হওয়ার আগেই সুস্থ হয়ে উঠবেন এরা। তবে প্রথম ম্যাচে তামিমের না খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর