বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করেছেন সাকিব আল হাসান। স্বপ্নের ব্যাটিং করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বল হাতেও পিছিয়ে ছিলেন না। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের চৌকস পারফরম্যান্স সত্ত্বেও সেমিফাইনালে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। দল ব্যর্থ হলেও নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে সব আলো নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন সাকিব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে দেখা যাবে না শ্রীলঙ্কা সিরিজে। টানা ক্রিকেট খেলার ধকল কাটাতে বিশ্রাম নিয়েছেন তিনি। তাকে ছাড়াই দ্বীপরাষ্ট্রে জয়ের টার্গেটে যাচ্ছে টাইগাররা। কিন্তু তার অনুপস্থিতি পুরোপুরি অনুভব করছেন মাশরাফি, তামিম, মুশফিকদের ভারপ্রাপ্ত কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। গতকাল অনুশীলনের প্রথম দিনে সাকিবের অনুপস্থিতিসহ দল নিয়ে কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত কোচ। তিনদিনের অনুশীলন ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন কোচিং স্টাফের দুই সদস্য ভারতের সাবেক টেস্ট ওপেনার ওয়াসিম জাফর ও বোলিং কোচ শ্রীলঙ্কার চম্পকা রামানায়েকে এবং ফিল্ডিং কোচ সোহেল ইসলাম ও ট্রেনার মারিও ভিলাভারায়ন।
বিশ্বকাপে তিন ক্রিকেটার ছয়শোর্ধ্ব রান করেছেন। সর্বোচ্চ ৬৪৮ রান করেন ভারতের রোহিত শর্মা। ৬৪৭ অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করে ৬০৭ রান করেন সাকিব। ৮ ইনিংসে সেঞ্চুরি দুটি ও হাফসেঞ্চুরি ছিল ৫টি। উইকেট ১১টি। এমন চমকে দেওয়া পারফরম্যান্সের পরও বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার হতে পারেননি। এমন একজন চৌকস ক্রিকেটারের সার্ভিস পেতে মরিয়া থাকবে যে কোনো দল। বাংলাদেশ তো চাইবেই। কিন্তু দ্বীপরাষ্ট্রে যাচ্ছেন না সাকিব। তার অভাব পূরণ করার মতো নয়। যদিও বোলিংয়ে বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে নিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। তারপরও ব্যাটিংয়ে তার অভাব অপূর্ণই রয়ে গেছে। অনুশীলনের প্রথম দিন কোচ সুজন স্বীকার করেছেন সাকিবের অনুপস্থিতি পূরণ হওয়ার নয়, ‘সাকিবের জায়গা পূরণীয় নয়। সাকিব তো সাকিবই। বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। ও না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দলের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটবে।’ সাকিবের পরিবর্তে তাইজুলকে নেওয়া প্রসঙ্গে কোচ বলেন, ‘তাইজুল খুব বেশি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পায় না। বিসিবি একাদশের হয়ে ভারতে দারুণ খেলছে। বিসিবি একাদশের হয়ে দুই ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছে। আমি মনে করি, তাইজুলের জন্য এটা বড় সুযোগ।’
গতকাল ক্যাম্পের প্রথম দিন উপস্থিত ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক সৈকত, মেহেদী মিরাজ, মুস্তাফিজ ও সৌম্য। শুধু সাকিব নয়, খেলছেন না লিটন দাসও। এই দুই ক্রিকেটার না থাকলেও শ্রীলঙ্কা সফরের দলটি শক্তিশালীই বললেন টাইগার কোচ, ‘শ্রীলঙ্কা সিরিজটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সিরিজে কয়েকজন ক্রিকেটারকে মিস করব। তারপরও মনে করি, আমাদের দলটি যথেষ্ট ব্যালেন্সড। শ্রীলঙ্কা আমাদের পরিচিত শক্তি। আশা করি সফরে আমরা ভালো খেলব।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মতো সেমিফাইনাল খেলতে পারেনি শ্রীলঙ্কাও। দলটি ভাঙ্গাগড়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমন একটি দলের বিপক্ষে ভালো খেলাকেই টার্গেট করেছেন টাইগার কোচ, ‘আমরা এখন জয়ের জন্য খেলি। শ্রীলঙ্কা সিরিজেও আমরা জয়ের জন্য খেলব। তবে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা সবসময়ই ভালো দল। তাই কাজটি একটু কঠিনই। তারপরও আমরা প্রতিটি ম্যাচেই ভালো খেলতে চাই।’
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে টাইগাররা ঢাকা ছাড়বে ২০ জুলাই। সিরিজের তিন ম্যাচ ২৬, ২৮ ও ৩১ জুলাই।
