মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মোহামেডানের জাগরণ, রহমতগঞ্জের চমক

শেষ আটেই শেষ দুই আবাহনী

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মোহামেডানের জাগরণ, রহমতগঞ্জের চমক

ঢাকা আবাহনীর উৎসব আর ঢাকা মোহামেডানের ভরাডুবি। ফুটবলে এমন দৃশ্যটি যেন দর্শকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। তা এবার পাল্টে গেল মৌসুমের প্রথম ট্রফি ফেডারেশন কাপে। ঢাকা মোহামেডান কোয়ার্টার ফাইনালে ২-০ গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। অন্যদিকে আসরের সর্বোচ্চ ১১ বার চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর মিশন শেষ হয়ে যায় শেষ আটেই। বলা চলে ঘরোয়া ফুটবলে এ এক বড় অঘটন। অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জের কাছে টাইব্রেকারে ৩-৪ গোলে হেরে যায় তারা। এখন মোহামেডান ও রহমতগঞ্জ ফাইনালে ওঠার লড়ায়ে মুখোমুখি হবে। মোহামেডানের দিনে আবাহনীর বিদায় ফুটবলে অনেক দিন পর এ ঘটনা ঘটল।

দুই আবাহনীর বিদায়টা ছিল অপ্রত্যাশিত। শক্তির দিক দিয়ে মোহামেডান ও রহমতগঞ্জ বেশ পিছিয়ে ছিল। সবার ধারণা ছিল শেষ আটেই শেষ হয়ে যাবে মোহামেডান ও রহমতগঞ্জ। অথচ বিদায়ঘণ্টা বেজে গেল দুই আবাহনীর। ২০১৫ সালের পর শেষ চারে জায়গা করে নিল মোহামেডান। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাদা-কালোরা যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিল তাতে ব্যবধান আরও বড় হতে পারত। ক্লাব সদস্য সচিব লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ক্যাসিনোকান্ডে  জড়িয়ে মোহামেডানকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন। এতটা সংকটাপন্ন অবস্থা যে, ফুটবলে দল গড়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

শেষ পর্যন্ত নিবেদিত সংগঠক ও সাবেক খেলোয়াড়দের প্রচেষ্টায় দল গড়া হয়। তবে সাফল্য পাওয়ার মতো নয়। খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করতে বেছে নেওয়া হয় সত্তর দশকের সেই ঐতিহাসিক সাদা-কালো জার্সি। এ জার্সির ওজন যে আলাদা তার প্রমাণও মিলছে। চট্টগ্রাম আবাহনী আগের ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসকে পরাজিত করে। দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে যে শক্তি তাতে তারাই ছিল ফেবারিট। অথচ মোহামেডান তাদের চেনা রূপ ধারণ করে সেমিতে জায়গা করে নেয়। প্রথমার্ধেই ২ গোল হয়। শাহেদ হোসেন ও মালের আলোচিত ফুটবলার সোলেমানে দিয়াবাতে গোলগুলো করেন।

গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচে ৯ গোল করে ঢাকা আবাহনী তাদের ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। রহমতগঞ্জের জয় সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল হলেও ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে সমানতালে লড়েছে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলশূন্য ড্র থাকায় আবাহনীর সমর্থকরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত সময় বেলফোর্টের গোলে তাদের উল্লাস আর দেখে কে। কিন্তু তা থেমে যায় রহমতগঞ্জের গাজীর গোলে। এরপর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উৎসবে মেতে ওঠেন রহমতগঞ্জের ফুটবলাররা। দলের নায়ক বনে যান গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটন। তিনি আবাহনীর বেলফোর্ট ও সানডের শট দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দেন। গোল করেন নাবিব নেওয়াজ জীবন, সোহেল রানা ও নাসির। কিন্তু রহমতগঞ্জের টানা চারটি শটই জালে। রহমতগঞ্জের পক্ষে গোল করেন দিদারুল, তুরাব, নাদিম ও আকপোপ। এই জয়ে প্রথমবারের মতো ফেডারেশন কাপে ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছে রহমতগঞ্জ। মোহামেডানের জাগরণ ও রহমতগঞ্জের চমকে এবারের আসরে নতুনত্ব এলো।

সর্বশেষ খবর