রবিবার, ১৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

দেখা মিলবে না কলিনড্রেসদের?

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দেখা মিলবে না কলিনড্রেসদের?

গ্যালারিতে সেভাবে দর্শকের দেখা মিলছে না। তবুও কয়েক বছর ধরে পেশাদার ফুটবল লিগে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। ম্যাচে যেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে। তেমনি স্থানীয় ফুটবলারদের পারফরম্যান্সও চোখে পড়ছে। পেশাদার লিগে খেলোয়াড়দের মধ্যে পেশাদারিত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সত্যি বলতে কি ঝিমিয়ে পড়া ফুটবল জেগে উঠতে শুরু করেছে। এর পেছনে বড় কারণই হচ্ছে লিগে ভালোমানের বিদেশি ফুটবলারের আগমন।  সনি নর্দে ও ওয়েড সনের মতো ভালোমানের বিদেশি আসায় লিগ উপভোগ্য ছিল। মাঝে নিম্নমানের বিদেশি আসায় ম্লান হয়ে পড়েছিল লিগ। দুই মৌসুমে ভালো বিদেশি আসায় দলগুলো যেমন উপকৃত হচ্ছে তেমনিভাবে স্থানীয়রা অনেক কলাকৌশল শিখতে পারছে।

বসুন্ধরা কিংস, ঢাকা আবাহনী, শেখ রাসেল, শেখ জামাল, সাইফ স্পোর্টিং, চট্টগ্রাম আবাহনী এমনকি মোহামেডানে ভালোমানের বিদেশির আগমনে শুধু লিগ নয় দেশের ফুটবলের চেহারাও বদলে যাচ্ছিল। অথচ সামনের মৌসুমে বিদেশি ফুটবলার নিষিদ্ধ করে লিগ আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করছেন ফুটবল শাসকরা। আজ বাফুফের নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। কথা হচ্ছে হঠাৎ করে বিদেশি বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠবে কেন? এ নিয়ে বাফুফের নির্বাহীর কমিটির সদস্যরা কিছু না বললেও ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ মিডিয়াকে বলেছেন, ক্লাবগুলোতেই বলছে বিদেশিদের কারণে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। তাদের স্বার্থের কথা ভেবেই সে পথেই বাফুফে এগুচ্ছে। কিন্তু কোনো ক্লাব কি লিখিতভাবে বাফুফেকে জানিয়েছে বিদেশি ছাড়া লিগ আয়োজনের? এবার করোনভাইরাসে লিগ বন্ধ থাকার পরও বিদেশি ফুটবলারদের বসিয়ে বেতন দিচ্ছে। তাই লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। এ জন্য তো কেউ বলেনি লিগে বিদেশি ফুটবলার বন্ধ করা হোক।

এ ব্যাপারে দেশের ফুটবল ব্যক্তিত্ব গোলাম সারোয়ার টিপু বলেন, ‘জানি না বাফুফে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে কি না। যদি নেয় তাহলে বলব ইচ্ছা করেই ফুটবলের ক্ষতি ডেকে আনবে- এ হবে এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কিছুদিন আগে কয়েকটি ক্লাব লিগে বিদেশির সংখ্যা কমানোর অনুরোধ রেখেছিল বাফুফের কাছে। মিডিয়াকে তখন কাজী সালাউদ্দিন বলেছিলেন, যত বিদেশিরা খেলবে ততই দেশিরা শিক্ষা পাবে। দলে ঢুকতে তাদের ভালো পারফরম্যান্স শো করতে হবে। এখন আবার বিদেশি নিষিদ্ধের চিন্তা কেন? কাউকে ছোট করে বলছি না বাংলাদেশে এখন কি সেই মানসম্পন্ন ফুটবলার আছে যাতে করে বিদেশি ছাড়াই লিগ জমবে? স্পেনের লা লিগায় তো জনপ্রিয়তা বেড়েছে নামকরা বিদেশিদের খেলার কারণে। বাংলাদেশের মান স্বল্প উন্নতি হয়েছে এটা মানি, তাও ভেস্তে যাবে বিদেশি নিষিদ্ধ করলে। এক বছর বন্ধ করে দেখুক না ফুটবলে কি মান হয়।’

টিপু বলেন, ‘বসুন্ধরা কিংস কলিনড্রেস, বখতিয়ারকে এনে শুধু নিজেরা লাভবান হয়নি, দেশের ফুটবলে উপকারে এসেছে। তাদের কাছ থেকে তো কিছু শিখতে পেরেছে। এএফসি কাপে আর্জেন্টিনার বার্কোসের এক ম্যাচ দেখেই তো আমি মুগ্ধ। ও যদি এবার লিগ খেলতে পারত লিগের চেহারাটাই পাল্টে যেত। কিংসের দেখাদেখি অন্য দলও ভালোমানের বিদেশি আনছে। ঢাকা আবাহনীর বেলফোর্ট ও সানডে ভালোমানের খেলোয়াড়। মোহামেডানের জাপানি উগবি নাগাতাও খুব ভালোমানের। এখন সামনে যদি আরও ভালোমানের বিদেশি আসে। তা কি ফুটবলের জন্য লাভজনক হবে না? সংখ্যা কমানো যেতে পারে কিন্তু একেবারে নিষিদ্ধ করাটা ঠিক হবে না।’

শেখ মো. আসলাম বলেন, ‘নালজেগার ঝুকভ কিংবা এমেকাদের কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। ভালো বিদেশি এলে অনেক কিছুই শেখা যায়। গত কয়েক বছর মানসম্পন্ন বিদেশির দেখা মেলেনি বলে ফুটবলে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। বসুন্ধরা কিংস নতুন এসেই ভালোমানের বিদেশি এনে চমক দেখিয়েছে। অন্যরাও আনছে। একটা লিগের সৌন্দর্য মানসমপন্ন বিদেশি ফুটবলার। সেখানে যদি নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে শুধু লিগ আকর্ষণ হারাবে না দেশের ফুটবলও বড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

সর্বশেষ খবর