শুক্রবার, ২২ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

অভিষেক ও বিদায়ী টেস্টে ৫ সেঞ্চুরিয়ান

অভিষেক ও বিদায়ী টেস্টে ৫ সেঞ্চুরিয়ান

১৮৭৭ সালে টেস্ট অভিষেক। ২০২০ সালে মহামারী করোনাভাইরাসে টেস্ট বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত টেস্টের সংখ্যা ২ হাজার ৪৫৭টি। ১৪৩ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত পাঁচজন ক্রিকেটার অভিষেক টেস্ট ও বিদায়ী টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন। পাঁচ ক্রিকেটারের মধ্যে তিনজন অস্ট্রেলিয়ার এবং একজন করে ভারত ও ইংল্যান্ডের। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কীর্তিটি গড়েন অস্ট্রেলিয়ার রেগিনাল্ড ডাফ এবং সর্বশেষ কীর্তি ইংল্যান্ডের অ্যালিয়েস্টার  কুকের। বাংলাদেশ প্রতিদিনের পাঠকদের উদ্দেশে পাঁচ ক্রিকেটারের কীর্তি তুলে ধরেছেন- আসিফ ইকবাল 

 

রেগিনাল্ড ডাফ

রেগিনাল্ড আলেক্সজান্ডার ডাফ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার। ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন মাত্র ২২টি। সেঞ্চুরি করেছেন ২টি। আশ্চর্য হলেও সত্যি, সেঞ্চুরি দুটি অভিষেক ও বিদায়ী টেষ্টে। ১৯০২ সালে মেলবোর্নে তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন ১০ নম্বরে ব্যাট করে। অভিষেক ইনিংসে ৩২ রান করেছিলেন। উইকেট বাজে থাকায় ডাফ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করেন ১০ নম্বরে। অসাধারণ ব্যাটিং করে খেলেন ১০৪ রানের ইনিংস। ১৪৩ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে মাত্র চারজন ক্রিকেটার ১০ নম্বরে ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন। ২২ টেস্ট ক্যারিয়ারে ডাফ রান করেন ১৩১৭ রান। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ১৪৬ রানের নান্দনিক এক ইনিংস।

উইলিয়াম বিল পন্সফোর্ড

উইলিয়াম বিল পন্সফোর্ড ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন। পরবর্তীতে এই রেকর্ড ভাঙ্গেন ভারতের মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন। ১৯২৪ সালে সিডনিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে খেলেন ১১০ রানের ইনিংস। মেলবোর্নে পরের টেস্টেও সেঞ্চুরি করেন পন্সফোর্ড। ১০ বছরের টেষ্ট ক্যারিয়ারে তিনি ২৯ টেস্ট খেলে রান করেন ২১২২। সেঞ্চুরি ২২টি। হাফসেঞ্চুরি ৬টি। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলেন ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালে। শেষ টেস্টে রান করেন ২৬৬ রান। যে পাঁচজন ক্রিকেটার অভিষেক ও বিদায়ী টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন, তাদের মধ্যে পন্সফোর্ডই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে খেলেন ২৬৬ রানের ইনিংস।  

গ্রেগ চ্যাপেল

অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান গ্রেগ চ্যাপেল। তার আরও দুই ভাই ইয়ান চ্যাপেল ও ট্রেভর চ্যাপেলও ক্রিকেট খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। ১৯৭০ সালে অ্যাসেজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক পার্থের হার্ড ও বাউন্সি উইকেটে অভিষেক ইনিংসেই জন ¯েœা, পিটার লেভারদের বিপক্ষে ৭ নম্বর পজিশনে ব্যাট করে খেলেন ১০৮ রানের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কও ছিলেন। অসাধারণ ক্রিকেটার চ্যাপেল ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টটি খেলেন ১৯৮৪ সালে। সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে বিদায়ী টেস্টের প্রথম ইনিংসে খেলেন ১৮২ রানের ইনিংসটি। পাঁচ ক্রিকেটারের মধ্যে তিনি আবার কোচিংও করিয়েছেন। ছিলেন ভারতের কোচ। ৮৭ টেস্ট ক্যারিয়ারে রান করেছেন ৭১১০ এবং সেঞ্চুরি ২৪টি।     

মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন

ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন। সাবেক অধিনায়ক ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন ৯৯টি। দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪৭ টেস্টে। ১৪৩ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে আজহারই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি অভিষেকের পর টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরির বিরল রেকর্ড গড়েন। তিনি আরও একটি বিরল রেকর্ডের অধিকারী। ক্রিকেট ইতিহাসে যে পাঁচজন ক্রিকেটার অভিষেক ও শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন, আজহারউদ্দীন তাদের একজন। ১৯৮৪ সালে কলকাতায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ১১০ রান করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০০০ সালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টেও ব্যাঙ্গালুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ৯৯ টেস্টে আজহারউদ্দীন রান করেন ৬২১৫। সর্বোচ্চ ১৯৯ এবং সেঞ্চুরি ২২টি। হাফসেঞ্চুরি ২১টি।

অ্যালিয়েস্টার কুক

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক অ্যালিয়েস্টার কুক ক্যারিয়ারের বিদায়ী টেস্টে সেঞ্চুরি করেন। প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছিলেন। ওভালে বিদায়ী টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন ১৩৭ রানের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৭১ রান। ভারতের বিপক্ষে ২০০৬ অভিষেক টেস্টে নাগপুরে প্রথম ইনিংসে করেন ৬০ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন ১০৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। শুধু ইংল্যান্ড নয়, সারা বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান কুক। সর্বোচ্চ পাঁচ রান সংগ্রাহকের মধ্যে তিনিই একমাত্র বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ১২৪৭২ রান করেন। তিনিই একমাত্র ওপেনার হিসেবে ১২ হাজারী ক্লাবের সদস্য। ১৬১ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন ৩৩টি। হাফসেঞ্চুরি করেছেন ৫৭টি। 

সর্বশেষ খবর