মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ক্রিকেটার তৈরির কারখানা এখন ঘোর সংকটে

ক্রিকেটার তৈরির কারখানা এখন ঘোর সংকটে

খালেদ মাসুদ পাইলট

এক সময়ে রাজশাহীকে বলা হতো ক্রিকেটার তৈরির কারখানা। এই শহরের একাডেমিগুলো থেকেই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন অনেক খেলোয়াড়। কিন্তু খেলোয়াড় তৈরির সেই আঁতুরঘর এখন ঘোর সংকটে। কেন রাজশাহীর ক্রিকেট একাডেমিগুলোতে আগের মতো আর জৌলুস নেই তা নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাজী শাহেদ

রাজশাহীর একাডেমিগুলো থেকে এখন আর জাতীয় দলের তারকা উঠে আসছে না কেন?

পাইলট : এটার অনেক কারণ আছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, তাদের যে দায়িত্বগুলো সেগুলো চর্চা নেই। যেমন লিগ হয় না, রেলিগেশন লিগ হয় না, একজন খেলোয়াড় ট্রেনিং করছে, তার যে পারফরমেন্স, কেমন টাইপের খেলোয়াড় সেই জায়গাটা যদি জানা না থাকে, তাহলে সে বুঝতে পারছে না, কোন লেভেলের খেলোয়াড়। আরেকটা বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থা যখন টিম বানাচ্ছে, বয়সভিত্তিক টিম বানাচ্ছে বা জেলা টিম বানাচ্ছে অথবা বিভাগীয় টিম বানাচ্ছে-এটা এখন আল্টিমেটলি ঢাকার দিকে চলে গেছে। স্থানীয় মানুষ বানাচ্ছে না। ঢাকা থেকে কিছু না কিছু মানুষ আছে, কতিপয় খারাপ দৃষ্টান্ত কিছু মানুষ আছে, যারা তাদের স্বার্থের জন্য হয়তো ম্যানুপুলেট করছে। এসব নানা কারণেই রাজশাহীর একাডেমিগুলো থেকে আগের মতো তারকা খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে না।

স্থানীয় কোচরা কোচিং করানোর সুযোগ পাচ্ছেন না কেন? তাদের কি কোচিং করানোর যোগ্যতা নেই?

পাইলট : আমার কাছে মনে হয়েছে ক্রিকেট বোর্ড একটা বড় ভুল করতে যাচ্ছেন। কারণ, আপনি যখন স্থানীয় কোচ দিয়ে কোচিং করাবেন, স্থানীয় কোচরা প্রত্যেকেটা খেলোয়াড়ের নাড়ি-নক্ষত্র সব জানে। কার কি চিন্তা-ভাবনা, কোন খেলোয়াড় টিমের জন্য খেলে, কোন খেলোয়াড় কি জন্য খেলে-এই জায়গাগুলো থেকে বেশ বড় একটা ঘাটতি। ফলে টিমের মধ্যেও একটা বিশ্বাস হারিয়ে গেছে খেলোয়াড়দের। কারণ আমি তো ঢাকার কোচের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখলেই তো টিমে সুযোগ পাব।

দল গঠনে কি তাহলে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন?

পাইলট : আমার মনে হয় এখানে একটা লিডারশিপের অভাব। লিডারশিপ বলতে বোঝাচ্ছি, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার লিডারশিপ যে, না আমার বিভাগে আমরা দল বানাবো। আমাদের সেরা টিম বানাবো। একটা সময় তাই হয়েছে। আমি যখন ক্যাপ্টেন ছিলাম, তখন বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সেক্রেটারি ছিলেন জামাল ভাই। কোনোদিন আমাদের হস্তক্ষেপ  করতেন না।

স্থানীয় প্রশাসনিক লোকজন আমাদের হস্তক্ষেপ করতে পারতেন না। কেউ কেউ বিভিন্ন সময় তদবির করেছেন, কিন্তু আমরা বলতাম, রাজশাহীর স্বার্থ আগে না ব্যক্তি স্বার্থ আগে? তখন কেউ আর হস্তক্ষেপ করত না। আমার মনে হয় এই জায়গাগুলোতে আপনি যখনই হস্তক্ষেপ করবেন বাইরে থেকে এসে, তখন ভালো খেলোয়াড়দের আস্থাটা হারিয়ে যায়। ক্যাপ্টেনকে, কোচকে অনেক ক্ষমতা দিতে হবে। স্থানীয় কোচকে পাওয়ার দিতে হবে। তাহলেই আগের মতো খেলোয়াড় গড়ে তোলা যাবে।

সর্বশেষ খবর