নেপালের মেয়েদের ফাইনাল খেলা হলো না। লিগ পর্বের খেলা শেষ করে তাদের বিদায় নিতে হলো। ড্র করলে ২২ ডিসেম্বর ঢাকায় তারা ফাইনাল খেলত। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে তাদের আশা শেষ হয়ে গেল। গতকাল কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তারা ০-১ গোলে হেরে যায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রিয়াঙ্কা ভারতের বিজয় এনে দেন। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কাকে ১২-০ গোলে হারিয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ শীর্ষে থেকেই ফাইনাল খেলবে। শিরোপা লড়াইয়ে দুই প্রতিবেশী লড়বে। সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ প্রথম আসর হয় ২০১৮ সালে। সেবার কাঠমান্ডুতে ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।
কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন ও অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা দুজনই বলে আসছেন, বাংলাদেশের চোখ শিরোপাতেই। ট্রফি তারা হাত ছাড়া করতে চায় না। শুরুতে নেপালের বিপক্ষে জেতা ম্যাচে মারিয়ারা ড্র করলে ফাইনাল নিয়েই সংশয় জাগে। শেষ পর্যন্ত সব সংশয় দূর করে মারিয়ারা আবারও চ্যাম্পিয়নের অপেক্ষায়। পুরুষ ফুটবলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলা হলে কে যে জিতবে বলা মুশকিল। কিন্তু নারী ফুটবলে বাংলাদেশের জয় যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
এবার অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কা একমাত্র দল যারা কোনো পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারেনি। ভুটানের কাছে ৬-০ গোলে হেরে মিশন শুরু করে। এরপর ভারত ও নেপালের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। সেখানে বাংলাদেশের জয় ছিল সময়ের ব্যাপার। তবুও ম্যাচের আগে অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা বলেছিলেন, ‘কোনো দলকে খাটো করে দেখা ঠিক হবে না। সেরাটাই দিতে হবে।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গোল উৎসব করে বাংলাদেশ প্রত্যাশিতভাবে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১২-০ গোলে জিতেই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে স্বাগতিকরা ৪-০ গোলে এগিয়েছিল। হ্যাটট্রিক করেছেন আফিদা খাতুন ও শাহেদা আক্তার রিপা। জোড়া গোল করেছেন রিতু পর্ণা চাকমা। আঁখি খাতুন, অনুচিং মগিনি, উন্নতি খাতুন ও স্বপ্না রাণী একটি করে গোল করেন। ২০১৮ সালে এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ১৭-০ গোলে হারিয়েছিল পাকিস্তানকে।
ফাইনালে উজ্জীবিত হয়েই মারিয়ারা ভারতের বিপক্ষে লড়বে। কেননা লিগ পর্বে ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। আবার এটাও ঠিক ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ। ফাইনালের মেজাজ ভিন্ন, এখানে কি যে হবে বলা যায় না। ঢাকায় এর আগে নারী ফুটবলে ফাইনাল খেলেছিল দুই দেশ। অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। এবারও ফাইনাল কমলাপুরে। বিজয়ের মাসে বিজয়ের পতাকা উড়াতে জানপ্রাণ দিয়ে লড়বে মারিয়া, তহুরা, আঁখি, শামসুন্নাহাররা।