বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সাকিবদের নিয়ে কি আতঙ্কিত প্রোটিয়ারা

মেজবাহ্-উল-হক

সাকিবদের নিয়ে কি আতঙ্কিত প্রোটিয়ারা

টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের সামর্থ্য কতটা-সেটা সবারই জানা! সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই বিশ্বকাপের ১৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জয় পেয়েছেন সাকিবরা! যদিও কাগজে কলমে লিখতে হবে দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রথম জয়। কারণ, টুর্নামেন্টকে আকর্ষণীয় করতে বাছাইপর্বকে নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রথম রাউন্ড’ -আর সেখানে তো জয় আছেই!

আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ধুঁকতে ধুঁকতে পাওয়া জয়ে বাংলাদেশ দল যে রাতারাতি টি-২০তে পরাশক্তি বনে গেছে -তা কিন্তু নয়! তারপর আজ সিডনিতে টাইগারদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হওয়ার আগে বেশ আতঙ্কে দক্ষিণ আফ্রিকা। নেপথ্যে কারণ, সেই ওয়ানডে সিরিজ।

সব শেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রোটিয়াদের তাদের মাটিতে রীতিমতো বিধ্বস্ত করে দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। যদিও ওয়ানডে ও টি-২০ এক নয়। তারপরও ভয় যেন প্রোটিয়াদের মনে রয়েই গেছে!

গতকাল সিডনিতে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রোটিয়া পেসার লুঙ্গি এনগিডি। তাকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, নিকট অতীতে দেশের মাটিতে আপনারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজে হেরেছিলেন। যদিও সেটা আলাদা ফরম্যাট। নিশ্চয়ই এবার বাংলাদেশকে টি-২০তে হালকা করে দেখছেন না? এনগিডির উত্তর, ‘না, না -এই টুর্নামেন্টে কোনো দলকেই হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। আর হ্যাঁ, তারা আমাদের হারিয়েছিল। বাজেভাবেই হারিয়েছিল। তবে এটা খুবই স্বাভাবিক। আগামীকাল (আজ) নতুন দিন, নতুন আরেকটি ম্যাচ। তবে এটা ঠিক আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে সতর্ক। তারা কি করতে পারে... কিছু দিন আগের কথা তো আমরা ভুলে যাইনি। তবে শুধু এটুকুই বলব, এটি নতুন আরেকটি ম্যাচ। এখানে কি ঘটে তা দেখতেই পারব।’

টি-২০তে পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টাইগারদের প্রাপ্তির খাতা একেবারে শূন্য। সাত ম্যাচের সাতটিতেই হার। তবে টি-২০তে জয়ের জন্য পরিসংখ্যান কোনো বাঁধা নয়। দরকার হয় মোমেন্টামের। প্রথম ম্যাচে জিতে টাইগাররা এখন দারুণ মোমেন্টামে। এই মোমেন্টাম ধরে রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বোকা বানাতে চান ক্যাপ্টেন সাকিব। উইকেটের ধরন অনুযায়ী স্কোর বোর্ডে রানও যোগ করতে হবে। সাকিব বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স বা পরিসংখ্যানের দিকে গুরুত্ব দিতে চাই না। (নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে) আমরা দল হিসেবে ১৪৫ (আসলে ১৪৪) রান করেছি এবং সেটা ডিফেন্ডও করতে পেরেছি। তার মানে ওই পিচের জন্য এটা যথেষ্ট ছিল। এখানেও তা হবে সেটা জরুরি নয়। এখানে হয়তো ১৮০ করতে হবে।’

সাকিব ব্যাটসম্যানদের পরিষ্কার একটা বার্তা দিয়েছেন, উইকেট যেমনই হোক নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে। ১৮০-১৯০ রানের উইকেট হলে তাই করতে হবে, আবার ১৩০ রানের উইকেট হলে সর্বোচ্চ স্কোরই করতে হবে।

তবে সিডনির উইকেট কেমন? অনেক দিন অস্ট্রেলিয়া দলে সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম আছেন বলেই এই বিষয়ে অনেকটা নির্ভার টিম ম্যানেজমেন্ট। সকালে টস করার সময়ই হয়তো ক্যাপ্টেনও বুঝে যাবেন, উইকেট কেমন? সে অনুযায়ী ম্যাচ নিয়ে চূড়ান্ত পরিকল্পনা হবে!

ক্রিকেটে মাঠে এবং মাঠের বাইরে অধিনায়ককে অনেক গুরু দায়িত্ব পালন করতে হয়। নিজেকে যেমন সেরা পারফর্ম করতে হয়, তেমনি সতীর্থদের ভিতর থেকেও সেরা পারফরম্যান্স বের করে নিয়ে আসতে হয়। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের সঙ্গে মাইন্ড গেমও খেলতে হয়। সিডনিতে মাঠে নামার আগে সব কাজই ঠিকঠাক করার চেষ্টা করেছেন সাকিব।

চাপ সহ্য করতে না পারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপ প্রয়োগ করতে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট হারিয়ে চাপে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা।’ আর সতীর্থদের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্স বের করে নিতে তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আগামীকাল আমাদের জন্য আরেকটা সুযোগ। আমাদের ১১ জনে যারা খেলবে, তাদের মধ্যে একজনের হিরো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তো ওই হিরোটা কে হবে, সেটাই দেখার।’

 

সর্বশেষ খবর