আর্জেন্টাইনরা লিওনেল মেসির মধ্যে খুঁজে পাচ্ছেন দিয়েগো ম্যারাডোনার ছায়া। ১৯৮০’র দশকে ম্যারাডোনা যেভাবে একটা দলকে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য প্রভাবিত করেছিলেন। ঠিক তেমনটাই করছেন লিওনেল মেসি। একথা প্রকাশ্যে বলতেও দ্বিধা নেই আর্জেন্টাইনদের। হোর্হে ভালদানো ছিলেন ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জয় করা ম্যারাডোনার দলের সদস্য। ভালদানো মেসির মধ্যে কেবল ম্যারাডোনার ছায়াই দেখছেন না, তিনি আরও খানিকটা এগিয়ে গিয়ে বলে দিলেন, মেসিকে যে ভালোবাসে না, সে ফুটবলকেই ভালোবাসে না।
ভালদানো বলেন, ‘লিওনেল মেসি গত ২০ বছর ধরে ফুটবল জিনিয়াস। প্রথম যেদিন তাকে দেখি, সেদিনই তাকে আমি ভালোবাসতে শুরু করি। মেসি ফুটবলের সৌন্দর্য্য তুলে ধরছেন। বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার মতোই দলকে প্রভাবিত করছেন।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, মেসি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মানুষের অনেক কাছাকাছি আছেন বর্তমানে। থাকবেনই তো। গত বছর কোপা আমেরিকার ট্রফি জয়ের পর আর্জেন্টাইনরা দুহাত বাড়িয়ে বুকে টেনে নিয়েছেন লিওনেল মেসিকে। এর আগে যেন তিনি তাদের কাছে পরই ছিলেন!
লিওনেল মেসি ও লুকা মডরিচ। দুজনেই নিজ নিজ দলের অধিনায়ক। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। লিওনেল মেসি কখনো উইংয়ে কখনো সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে আবার কখনো অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেন। সুনির্দিষ্ট স্থানে তাকে দেখা যায় না কখনো। ম্যারাডোনা অনেক আগে একবার বলেছিলেন, মেসির জন্য পুরো মাঠটাই খেলার স্থান। তাকে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রাখা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। ম্যারাডোনার উপদেশ মেসির প্রায় সব কোচই মেনে চলেন। অন্যদিকে লুকা মডরিচ খেলেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে। তার স্থান মোটামুটি পাকা।
সতীর্থদের কাছে লিওনেল মেসি একজন নেতা, পথপ্রদর্শক, বন্ধু এবং পরম আপনজন। গতকাল যেমনটা বললেন নিকোলাস ট্যাগলিয়াফিকো। ‘আমাদের কাছে মেসি একজন নেতা। যে আমাদেরকে সব সময়ই পথ দেখায়। অনুপ্রেরণা জোগায়। সে সব সময় এমনই ছিল। আমরা সবাই তার নেতৃত্বে একই লক্ষ্যে ছুটে চলেছি। সেই লক্ষ্য, বিশ্বকাপের শিরোপা জয়।’ কোচ লিওনেল স্কালোনিরও মেসির নেতৃত্বের উপর আছে অগাধ আস্থা। বিপরীত দিকে লুকা মডরিচকে নিয়েও গর্বিত ক্রোয়েশিয়ানরা। তার নেতৃত্বেই গত বিশ্বকাপে ফাইনালে খেলেছিল ক্রোয়েশিয়া। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য লুকা মডরিচ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন। সেই বছর ফিফার বর্ষসেরাও হন তিনি। জয় করেন ব্যালন ডি’অর ট্রফিও। আজ মেসি-মডরিচ লড়াইটা জমবে বেশ। দুজনেরই সামনেই আছে অধরা স্বপ্ন পূরণের হাতছানি।