শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বাঘের ‘ডেরায়’ ফিরছেন সেই হাতুরাসিংহে!

ইংল্যান্ড সিরিজের আগেই নতুন কোচ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাঘের ‘ডেরায়’ ফিরছেন  সেই হাতুরাসিংহে!

রাসেল ডমিঙ্গোকে ছেঁটে ফেলতে পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছিল ক্রিকেট বোর্ড। ছেঁটে ফেলছিল তার ডালপালাগুলো। তবে কখনোই বিসিবির কর্তাব্যক্তিরা স্বীকার করেননি দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কোচকে ছেঁটে ফেলার বিষয়টি। চলতি বছরের টি-২০ বিশ্বকাপের আগে ডমিঙ্গোকে সরিয়ে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত  শ্রীধরন শ্রীরামকে। ছুটি দেওয়া হয় ডমিঙ্গোকে। যদিও ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে কোচ ছিলেন ডমিঙ্গো। ভারতের বিপক্ষে ২০১৫ সালের পর ফের ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। কিন্তু টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। বিশেষ করে মিরপুরে কাছাকাছি এসেও জয় না পাওয়ায় হতাশ বিসিবি কর্ণধাররা। মিরপুর টেস্ট হারের পরপরই বিসিবি সিদ্ধান্ত নেয় সাদা পোশাক ও লাল বলে নতুন কোচ নিয়োগ দেওয়ার। মার্চে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজের আগেই হয়তো নিয়োগ পাবে নতুন কোচ। বেন স্টোকস ও জশ বাটলারদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে কোচের দায়িত্ব পালন করবেন টি-২০ বিশ্বকাপের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীরাম। হেড কোচের লড়াইয়ে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটার ও টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী ইংল্যান্ডের কোচ মাইক হাসি ও বাংলাদেশের সাবেক কোচ শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভূত চন্ডিকা হাতুরাসিংহে। হাতুরাসিংহে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ক্রিকেট বোর্ড নতুন করে লঙ্কান বংশোদ্ভূত কোচের ওপর আস্থা রাখছে। ইংল্যান্ড সিরিজের আগে কোচ নিয়োগ হতে পারে বলেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন, ‘যেহেতু জাতীয় দলের হেড কোচ দরকার, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আনার ব্যাপারে কাজ করব। ইংল্যান্ড সফরে আসছে। এখানে একটু সুবিধা আছে সময় পাচ্ছি। চেষ্টা থাকবে ইংল্যান্ড সফরের আগে নির্ভরযোগ্য কাউকে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে।’

ডমিঙ্গো দায়িত্ব নেন ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর আগস্টে। নিজ থেকে দায়িত্ব ছেড়ে দেন ২৭ ডিসেম্বর রাতে। তার ৪০ মাসের কোচিংয়ে টাইগাররা ২২ টেস্ট খেলে জিতেছে ৩টি এবং হার ১৭। ৩০ ওয়ানডেতে ২১ জয় এবং ৫৯ টি-২০ ম্যাচে জয় ২৩টি। সাফল্য ৪৪ শতাংশ। তারপরও বিসিবি তার ওপর আস্থা রাখেনি। কারণ নাকি, তিনি বাংলাদেশের কালচারের সঙ্গে মানিয়ে দল পরিচালনা করতে পারেননি। দল পরিচালনায় ক্রিকেটারদের ওপর কঠোর হতে পারেননি ডমিঙ্গো, ক্রিকবাজকে এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক আকরাম খান, ‘কোনো সন্দেহ নেই ডমিঙ্গো ভালো কোচ। কিন্তু হাতুরাসিংহের সঙ্গে তার পার্থক্য, হাতুরাসিংহে ক্রিকেটারদের সবকিছুই জানতেন। ভালোভাবে তাদের পরিচালনা করতেন। প্রয়োজনে কঠোর হতেন। কিন্তু ডমিঙ্গোর কঠোর মনোভাবের অভাব ছিল।’                            

হাতুরাসিংহে প্রথম যখন দায়িত্ব নেন  টাইগারদের তখন তাদের পারফরম্যান্স তলানির দিকে। তার কোচিংয়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের গ্রাফ ধীরে ধীরে উপরে উঠতে থাকে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ক্রিকেট পরাশক্তি ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এবং পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেন মাশরাফিরা। ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এরপর ওয়ানডে সিরিজে হারায় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে। টেস্টে হারায় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে। হাতুরাসিংহে কোচ থাকাকালীন ২১ টেস্টে অংশ নিয়ে টাইগারদের জয় ৬। যাতে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডও ছিল। হার ১১ এবং ড্র ৪। ৫১ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় ২৫ এবং হার ২৩টি। পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার তিনটি সিরিজ ছিল স্মরণীয়। তবে টি-২০ ম্যাচগুলোতে সাফল্য ছিল না টাইগারদের। ২৯ ম্যাচে জয় মাত্র ১০ এবং হার ১৯টিতে। সব মিলিয়ে সাফল্য ৪৩ শতাংশ।

নতুন এফটিপিতে ব্যস্ত সময় পার করবে টাইগাররা। বছর শুরু করবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ দিয়ে। সাকিব, তামিমদের নতুন কোচের দায়িত্ব নেবেন হাতুরাসিংহে।  

সর্বশেষ খবর