সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কোথায় গেল ব্যাডমিন্টনের সেই সোনালি দিন

কোথায় গেল ব্যাডমিন্টনের সেই সোনালি দিন

ফুটবল, ক্রিকেট ও হকি বরাবরই বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলা। এক সময়ে ইনডোরের   খেলাও ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। 

পুরান ক্রীড়া পরিষদের জিমনেসিয়ামে ব্যাডমিন্টনের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন লিগ বা অন্য টুর্নামেন্ট হলে দর্শকের ঢল নামত। জিমনেসিয়াম বা তার আশপাশে এতটা ভিড় হতো যে তা সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হতো। ফুটবল, ক্রিকেট ও হকির মতোই ব্যাডমিন্টনেও ছিল তারকা ভরপুর। নান্টু, হাশেম, জিলানী, বাবু, মাহবুব, রুমানা, ডানা, মরিয়ম, এলিনা এদের নাম ছিল ক্রীড়ামোদীদের মুখে মুখে। ৭০ ও ৮০ দশকে ব্যাডমিন্টনের জনপ্রিয়তা ভেবে মোহামেডান, বিমান, সূর্য তরুণ, ঈগলস, শেলটেক নিয়মিত দল গড়ত। বিশেষ করে মোহামেডান ও বিমান সেরা দল গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়ত।

কোথায় গেল ব্যাডমিন্টনের সেই সোনালি দিন। লিগ, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়মিত ছাড়াও কত যে টুর্নামেন্ট হতো তা হিসাব মেলানো মুশকিল। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও নিয়মিত দেখা মেলে না এমন করুণ অবস্থা দেখে ব্যাডমিন্টন খেলার  ব্যাপারে অনেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। খেলা নেই তো কী হয়েছে। তবুও শাটলাররা নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যেত। এখন যে অনুশীলন করবে সেই অবস্থাও নেই। ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন থেকে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে প্রতিযোগিতা ছাড়া কেউ উডেন ফ্লোর (পল্টন ময়দান সংলগ্ন) জিমনেসিয়াম ব্যবহার করতে পারবে না। খেলোয়াড়রা সব দিক দিয়েই তাদের অধিকার হারিয়েছেন বলা যায়। তাদের একমাত্র আয়ের পথ এখন খ্যাপ খেলা। এভাবে কি ব্যাডমিন্টন টিকিয়ে রাখা যাবে?

২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত লিগ হয়েছে মাত্র দুবার। এতেই ভালোভাবে ব্যাডমিন্টনের দৈন্যদশা ফুটে উঠে। এ ব্যাপারে ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, ‘অস্বীকার করার উপায় নেই এ ঘটনা সত্য। তবে এত বড় লম্বা গ্যাপতো আমাদেরই দায়িত্বে থাকা অবস্থায় হয়নি। এ জট দীর্ঘদিনের। আমরা চাচ্ছি লিগ পুনরায় করার। এটা ঠিক এক সময় জনপ্রিয় ক্লাবগুলো লিগে অংশ নিত। এখন আবার অনেক ক্লাবই আগ্রহী নয়। যাক তারপরও আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে লিগের জট খোলা। স্পন্সরের জন্য আলোচনা করছি। আশা রাখি তা সমাধান হয়ে যাবে। আগে যেমন চাইলেই স্পন্সর পাওয়া যেত এখন তা বড্ড কঠিন। করোনার পরত অনেক ফেডারেশনই অর্থ সমস্যায় জর্জরিত। আমি আবারও বলছি লিগ নামানোর ব্যাপারে চেষ্টার ত্রুটি রাখছি না।’

ব্যাডমিন্টনে পুরুষ বিভাগে সাবেক চ্যাম্পিয়ন এনায়েত উল্লাহ খান বলেন, ‘ব্যাডমিন্টন সোনালি দিনে অবশ্যই ফিরবে যদি যোগ্য লোকের মাধ্যমে তা পরিচালিত হয়। এতটা সংকটাপন্ন হতো না যদি ফেডারেশনে ব্যাডমিন্টন বুঝে এমন লোকরা দায়িত্ব পেতেন। কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে নির্বাচনের দেখা নেই। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীই তো দেশের খেলাধুলার অভিভাবক। তিনিই পারেন ব্যাডমিন্টনে সমাধানের পথ দেখাতে। না হলে এ খেলা হারাতে বেশি সময় লাগবে না।’

সর্বশেষ খবর