শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাইশগজে ব্যাটারদের ধৈর্য পরীক্ষা

মেজবাহ্-উল-হক

বাইশগজে ব্যাটারদের ধৈর্য পরীক্ষা

মিরপুরের উইকেট, টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা, ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষা -সবই ঠিক ছিল! তারপরও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে যায় বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের ব্যবচ্ছেদ করলে সবার আগে একটি ‘কারণ’ সামনে চলে আসে, তা হচ্ছে ‘ব্যাটসম্যানরা ধৈর্যের পরীক্ষায় ফেল’!

আজ সেই একই ভেন্যু মিরপুর শের-ই-বাংলা  স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। হারলেই সিরিজ হাত ছাড়া। টাইগারদের জয়ের কোনো বিকল্প নেই। এই ম্যাচে জিততে ব্যাটারদের ধৈর্যের পরীক্ষায় পাস করতে হবে বলে মনে করেন ক্রিকেট বিশ্লেষক, অভিজ্ঞ কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘উইকেট ঠিকই আছে। উপমহাদেশের উইকেট সাধারণত এমনই হয়। এমন উইকেটে খেলতে হবে ধৈর্য ধরে। উইকেটে গিয়েই আক্রমণাত্মক খেলার সুযোগ নেই। মারার বল তেমন একটা পাওয়া যাবে না। উইকেটে অনেক সময় নিতে হবে। ধীরে ধীরে ইনিংস বড় করতে হবে। পার্টনারশিপ বড় করতে হবে। তাহলে স্কোরও বড় হবে।’

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৫০ ওভার খেলতে পারেননি। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ বিষয়টি সাধারণত স্বাভাবিক মনে হওয়ার কথা নয়! কারণ একে তো ঘরের মাঠ। উইকেট কিংবা কন্ডিশন সব কিছুই জানা শোনা। তার ওপর ওয়ানডে হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রিয় ফরম্যাট। আর এই ফরম্যাটে ৫০ ওভার খেলতে না পারাটা ব্যাটসম্যানদের জন্য চরম ব্যর্থতারই ইঙ্গিত করে। ফাহিম বলেন, ‘৫০ ওভার খেলতে না পারাটা মোটেও ভালো ঘটনা নয়। অবশ্যই পুরো সময় খেলতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে যেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরাই শেষ পর্যন্ত খেলতে পারেন। যদি শেষ উইকেট জুটি ৫০ ওভার শেষ করে, সেটা হবে না। ৪-৫ উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত যেতে হবে। তখন শেষের দিকে কেউ নামলে তার পক্ষে বিগ-শট খেলে দ্রুত রান করা সহজ হবে।’

সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ছিল কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের দ্বিতীয় মেয়াদে যোগ দেওয়ার পর প্রথম ম্যাচ। আর এই ম্যাচ থেকেই তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করে দিয়েছেন। সাকিব আল হাসানকে তার পছন্দের তিন নম্বর পজিশন থেকে সরিয়ে পাঁচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তার ব্যাটিং ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন তিনে ব্যাটিং করেই। সব শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার ব্যাটিং সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল। ৮৬.৫৭ গড়ে ৬০৬ রান করেছিলেন ওই আসরে। দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫টি হাফ সেঞ্চুরি। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও তিনে নেমেই ক্যারিশম্যাটিক ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু হাতুরাসিংহে এসেই বদলে দিলেন তার ব্যাটিং অর্ডার।

এর আগে হাতুরাসিংহে যখন কোচ ছিলেন তখনো সাকিবকে খেলানো হতো মিডল অর্ডারে। তিনি চলে যাওয়ার পর সাকিব তিনে খেলেছেন। আবারও হাতুরা আসার পর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে পাঁচে নিয়ে যাওয়া হলো। আর এক্সপেরিমেন্টের প্রথম ম্যাচেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব। মাত্র ৮ রানেই আউট হয়েছেন।

সাকিবের ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তন করা কি খুবই দরকার ছিল? নাজমুল আবেদীনের ভাষ্য, ‘নিশ্চয়ই কোচের আলাদা কোনো পরিকল্পনা আছে। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা ছাড়া সাকিব দলের সিনিয়র ক্রিকেটার, মনে হয় তার সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। এখন দেখা যাক সামনে কেমন করে।’

বাংলাদেশের বোলিং ফাহিমের কাছে ‘আপ টু দ্য মার্ক’ মনে হয়েছে! ভালো লেগেছে ফিল্ডিংও। তবে প্রথম ম্যাচের ব্যাটিংকেও খুব বাজে বলতে চান না তিনি, ‘যে উইকেটে খেলা হচ্ছে এগুলো ৩০০ রানের উইকেট নয়। তবে ২৫০-২৬০ খুবই ভালো। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। বোলিং-ফিল্ডিং ভালো হয়েছে। তবে আরও ভালো করার সুযোগ আমাদের আছে।’

‘মনে রাখতে হবে, ইংল্যান্ড কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল। তারা উপমহাদেশের কন্ডিশনে খেলে এখন অভ্যস্ত। তাই তাদের বিরুদ্ধে জয় পেতে হলে কোনো ভুল করা যাবে না। সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’

সর্বশেষ খবর