দেশের ফুটবলে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই। মেয়েরা সাফল্য এনে দিলেও পুরুষ জাতীয় দল ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে কোনোভাবেই বের হয়ে আসতে পারছে না। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভুটানের পেছনে আছে বাংলাদেশ। অথচ ফুটবল ঘিরে সারা দেশে এখন আলোচনা তুঙ্গে। সত্তর ও আশির দশকে জনপ্রিয়তায় ভাসত ফুটবল। এখন দুর্নীতি ঘিরে দেশের ফুটবল উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এর চেয়ে বড় লজ্জা আর কী হতে পারে। ২০০২ সালে নির্বাচিত কমিটি অবৈধভাবে ভেঙে দেওয়ায় ফিফা বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করেছিল। ২১ বছর পর চুরির অভিযোগে একজন বড় কর্মকর্তাকে দুই বছর নিষিদ্ধ করল। বেতনভুক কর্মচারী হলেও ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফিফা ও এএফসির গুরুত্বপূর্ণ কাজ তদারকি মূলত তিনিই করেন।
সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আবু নাঈম সোহাগই দুই বছর নিষিদ্ধ হলেন! ফিফা দীর্ঘ তদন্ত করে দেখেছে তারা যেসব অনুদান দেয় তা সঠিক খাতে ব্যয় হয় না। এমনকি হিসাবে গরমিল পাওয়া গেছে। দুর্নীতির জন্য ফিফা ফ্রান্সের বিখ্যাত ফুটবলার মিশেল প্লাতিনিকে ছাড় দেয়নি। তাকেও নিষিদ্ধ করেছিল।
সে ক্ষেত্রে সোহাগ, সালাউদ্দিন বা সালাম যার নামই বলি না কেন, তারা তো চুনোপুঁটি।
বাফুফের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুধু লজ্জা বলে হালকা করে ফেলা হচ্ছে। এটা তো আর তামাশা নয়। এর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি জড়িত। দুর্নীতির দায়ে ব্যক্তি সোহাগ নিষিদ্ধ হলেও তিনি তো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিষয়টি তাহলে এমন দাঁড়ায় না যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ফিফার অর্থ আত্মসাৎ করেছে? এত বড় ঘটনার পরও বাফুফে যেন বিষয়টি হাসিতামাশায় পরিণত করেছে! একজন বলছেন তিনি এ ঘটনা জানতেনই না। আরেকজন বলছেন এটাকে কোনোভাবে দুর্নীতি বলা যাবে না। অবাক লাগে এ দুজনই ফেডারেশনের বড় কর্মকর্তা। দেশের ইমেজের প্রশ্ন যেখানে জড়িত তারা এ ধরনের কথা বলেন কীভাবে? দুর্নীতি যদি না হয়ে থাকে তাহলে ফিফা সোহাগকে নিষিদ্ধ করল কেন? আরও অবাকের বিষয়, বাফুফেই সোহাগকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে।’
মামুনুল বলেন, ‘অনেকে বলছেন বা লেখালেখি হচ্ছে সোহাগের সঙ্গে বাফুফের অনেকেই জড়িত। আমার প্রশ্ন- ফিফা কি তাদের রিপোর্টে আরও কারও নাম লিখেছে? ফিফার তদন্ত স্বচ্ছ তা পৃথিবীর সবাই একবাক্যে স্বীকার করবে। সুতরাং দোষ ছাড়া তারা কাউকে বহিষ্কার করবে না। আমি বলব দোষী ব্যক্তিকে এমন শাস্তি দেওয়া উচিত যা থেকে কিছুটা হলেও দেশের ভাবমূর্তি ফিরতে পারে। ফিফা যদি পরে কাউকে দোষী চিহ্নিত করে তাদেরও শাস্তি দেওয়া উচিত।