ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে মাত্র পাঁচ বছরে সব শিরোপা জিতে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। এবার তাদের অগ্নিপরীক্ষা। কিংসই বাংলাদেশের প্রথম দল যারা ঘরোয়া আসরে অভিষেকেই সাফল্য পেয়ে এএফসি কাপে খেলেছে। এএফসি কাপও ফিফা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ক্লাব টুর্নামেন্ট। তিনবার এ আসরে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। যদিও প্রথম আসরটা দারুণ শুরু করেও কিংস এগোতে পারেনি। করোনাভাইরাসে তা পরিত্যক্ত হয়ে যায়। আরও দুই আসরে দুভার্গ্যক্রমে গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায়। এফসি হচ্ছে এশিয়ান ক্লাব লেভেলের দ্বিতীয় স্তরের আসর। সে আসর টপকিয়ে বসুন্ধরা কিংস এশিয়ান ক্লাবের লেভেল-১ টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলোকে নিয়ে প্রতি বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হয়ে থাকে। অন্যান্য মহাদেশেও তা অনুসরণ করে।
আজই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কিংসের স্বপ্নের অভিষেক। রাত সাড়ে ৯টায় শারজাহ স্টেডিয়ামে রবসন, জিকোদের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শক্তিশালী দল শারজাহ এএফসি। এটি প্রিলিমিনারি রাউন্ডের খেলা। জিতলে পরবর্তী রাউন্ডে ইরানের ট্রেক্টরের মুখোমুখি হবে। হারলেই এক ম্যাচ খেলেই বিদায়। দেশের ফুটবল সেরাদের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আজই। বাংলাদেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলে নতুন এক ইতিহাস গড়বে। একি শুধুই ইতিহাস নাকি আরব জয় করে তপু বর্মণরা তাক লাগিয়ে দেবেন। আসলে শারজাহ এতটাই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ যে জয়ের আশা করাটা স্বপ্নই বলা যায়।
বসুন্ধরা কিংস যেমন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা দল। তেমনি শারজাহ এফসি এশিয়ান লেভেলে দূরন্ত। কিংসে মানসম্পন্ন বিদেশি ফুটবলার রয়েছেন। তবে শারজার ফরেন কালেকশন আতঙ্ক পাওয়ার মতো। বিশেষ করে দুটি নামই সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। বসনিয়ার মিডফিল্ডার মিয়ালেম পিয়ানিচ ও স্পেনের ফরোয়ার্ড পাকো আলকাসার। দুজন আবার কিছুদিন আগেও বার্সেলোনায় দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। খেলেছেন জুভেন্টাসেও। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপেও খেলেছেন পিয়ানিচ। সন্দেহ নেই মাঠে কিংসের মূল কাজই থাকবে এদের আটকানো। আছেন আরও চার ব্রাজিলিয়ান- লুয়ান জিনিও, আলিসন ম্যাথুজ, কাইও ও মার্কাস।
কিংসও সেরা একাদশে ছয়জন বিদেশি খেলাতে পারবে। অধিনায়ক রবসন রবিনহো, ডরিয়েলটন গোমেজ, মিগেল ফিগেরা ও আশরফ গফুরভ থাকছেন নিশ্চিত। বাকি দুই বিদেশি কাকে নামাবে সেটাই প্রশ্ন। কিংসে যদি ছয়জন বিদেশি নামে তবে পাঁচ লোকাল কে হবেন সেটাই প্রশ্ন। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো, ডিফেন্ডার তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ও তারেক কাজী অটোমেটিক চয়েস। বাকি একজন কে সোহেল রানা, রাকিব হোসেন না মোরসালিন আহমেদ। চারজন বিদেশি থাকলে রাকিব ও সোহেল রানার থাকার সম্ভাবনা বেশি। পরে বদলি হিসেবে মোরসালিনকে দেখা যাবে। এ নিয়ে কোচ অস্কার ব্রুজোনকে মধুর সমস্যায় পড়তে হবে। তিনি বলেন, ‘সত্যিই আমাদের বড় পরীক্ষা দিতে হবে। শারজাহ এএফসির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে কিংস নিজেদের অবস্থান বুঝতে পারবে। এশীয়মানের চেয়ে আমরা কতটা পিছিয়ে আছি অথবা এশিয়ামানের কতটা কাছে আছি।’