মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিতর্কিত রেফারিংয়ে স্বপ্নভঙ্গ কিংসের

ওড়িশা এফসি ১ : ০ বসুন্ধরা কিংস

রাশেদুর রহমান

বিতর্কিত রেফারিংয়ে স্বপ্নভঙ্গ কিংসের

আবারও স্বপ্নভঙ্গ। লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি গিয়েও সফল হতে পারলেন না রবসন রবিনহোরা। রেফারির বিতর্কিত এক সিদ্ধান্ত বদলে দিল ম্যাচের ভাগ্য। অথচ দুর্দান্ত ফুটবল খেলছিল দল। একের পর এক আক্রমণে গোলের সুযোগ তৈরি করছিলেন রবসন রবিনহোরা। গোল করতে না পারলেও প্রতিপক্ষের ওপর প্রচন্ড  চাপ তৈরি করছিলেন তারা। তবে আসরর গফুরভকে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে লাল কার্ড দেখান রেফারি। ১০ জনের দল নিয়ে ম্যাচের অর্ধেকেরও বেশি সময় খেলতে হয় কিংসকে। ওড়িশার কাছে ১-০ গোলে হেরে এবারও গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিল অস্কার ব্রুজোনের দল।

২০২১ সালের এএফসি কাপে নকআউট পর্বে খেলার দারুণ এক সম্ভাবনা ছিল কিংসের। সেবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মোহনবাগানের বিপক্ষে জিতলেই নকআউট পর্বে খেলার সুযোগ পেত তারা। তবে সেই ম্যাচে সুশান্ত ত্রিপুরা লাল কার্ড পেলে ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে হয় কিংসকে। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ড্র করে অস্কার ব্রুজোনের দল। এবারও এক লাল কার্ড বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ওড়িশার ১০ নম্বর জার্সিধারী ফুটবলার আহমেদকে পেছন থেকে ফাউল করেন গফুরভ। রেফারি প্রথমে হলুদ কার্ড বের করতে গিয়েছিলেন। তবে ফুটবলারদের মধ্যে বাগবিতন্ডা শুরু হলে রেফারি তা থামানোর চেষ্টা করেন। তারপর লাল কার্ড দেখিয়ে দেন গফুরভকে। বসুন্ধরা কিংসের এই উজবেক ফুটবলার বার বার রেফারির কাছে প্রশ্ন করেছেন, কেন লাল কার্ড দেওয়া হলো। এটা কী লাল কার্ড হওয়ার মতো ফাউল ছিল! রেফারি নিরুত্তর ছিলেন। সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান অস্কার ব্রুজোন। তাকেও হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।

বসুন্ধরা কিংস গতকালও গোলের দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করে। ইনজুরি থেকে ফেরা রবসন রবিনহো দারুণ খেলেন। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারছিলেন না কেউই। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে

ডরিয়েলটন ডি বক্সের ভিতরে ঢুকেছিলেন বল নিয়ে। দারুণ সুযোগ ছিল গোল করার। তবে তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬১ মিনিটে ওড়িশার মুরতাদা ফল কর্ণার কিক থেকে বল পেয়ে হেডে বল জালে জড়ান। এই গোলের পরই বসুন্ধরা কিংস অনেকটা পিছিয়ে পড়ে।

এশিয়ান লেভেলে জয় পতাকা ওড়ানোর জন্য ২০২০ সালেই শক্তিশালী দল গঠন করেছিল বসুন্ধরা কিংস। সেবার লিওনেল মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে খেলা হারনান বারকোস এক ম্যাচেই চার গোল করে দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। তবে করোনা মহামারির কারণে সেই মৌসুমে এএফসি কাপই বাতিল হয়ে যায়। পরের মৌসুমে মালদ্বীপে খেলতে গিয়ে তিন ম্যাচেই অপরাজিত ছিল কিংস। ৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে বিদায় নেয় তারা। গত বছরও দুর্দান্ত ফুটবল খেলে বসুন্ধরা কিংস। কলকাতার যুবভারতীতে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। সমান পয়েন্ট ছিল মোহনবাগানেরও। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় মোহনবাগানই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ইন্টার জোন প্লে-অফ সেমিফাইনালে পৌঁছে যায়। এবারের সমীকরণ ছিল আরও সহজ। শেষ ম্যাচে একটা পয়েন্ট পেলেই নিশ্চিত ইন্টার জোন প্লে-অফ সেমিফাইনাল খেলতে পারত বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু একটা পয়েন্টও সংগ্রহ করতে পারল না রেফারির এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে। বিপরীত দিকে সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগাল ওড়িশা। প্রথমবারের মতো তারা এএফসি কাপ খেলতে এসেই পৌঁছে গেল ইন্টার জোন প্লে-অফ সেমিফাইনালে। গ্রুপ পর্বে বসুন্ধরার মাঠে এসে ৩-২ গোলে হেরেছিল ওড়িশা। এবার নিজেদের মাঠে কিংসকে হারিয়েই কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছে গেল ভারতীয় দলটি।

সর্বশেষ খবর